কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ মার্চ ২০২৫, ০৮:০২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

যায়যায়দিন দখলমুক্ত ও ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি

যায়যায়দিন দখলমুক্ত ও ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি : কালবেলা
যায়যায়দিন দখলমুক্ত ও ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন। ছবি : কালবেলা

দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার ডিক্লেয়ারেশন বাতিল করেছে সরকার। প্রকাশের ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে পত্রিকাটির সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বুধবার (১২ মার্চ) ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক তানভীর আহমেদের সই করা অফিস আদেশে এ তথ্য জানা যায়।

এদিকে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে প্রধান কার্যালয় দখল এবং ঠুনকো অজুহাতে পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের অভিযোগ তুলেছে যায়যায়দিন কর্তৃপক্ষ। বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ এ অভিযোগ তুলেন। তিনি অবিলম্বে যায়যায়দিন অবৈধ দখলমুক্ত এবং পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও জানান।

কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ বলেন, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে একটি চক্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল করে। তারা সেখান থেকে অবৈধভাবে দৈনিক যায়যায়দিনের মূল লোগোর সঙ্গে হুবহু মিল রেখে ‘দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিদিন’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশ করছে; যা আইনগতভাবে অবৈধ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৭ সালে আর্থিক সংকটে পড়ে শফিক রেহমান দৈনিক যায়যায়দিন পাবলিকেসন্স-এর শেয়ার এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীর কাছে বিক্রি করেন। ২০০৭ সালের ২৩ মার্চ ফরম-১১৭ এর মাধ্যমে শফিক রেহমান, তার স্ত্রী তালেয়া রহমান এবং ছেলে সুমিত রহমান তাদের যায়যায়দিন পাবলিকেসন্সের সব শেয়ার সাঈদ হোসেন চৌধুরী ও আবুল হাসান মো. আল ফারুক বরাবর হস্তান্তর করেন। এর দুদিন পর অর্থাৎ ২৫ মার্চ ২০০৭ তারিখ শফিক রেহমান ও তালেয়া রেহমান ফরম-১১৭ এর মাধ্যমে তাদের যায়যায়দিন প্রিন্টার্সের শেয়ার এইচআরসি মিডিয়া লিমিটেড এবং এইচআরসি বাংলাদেশ লিমিটেডের নামে হস্তান্তর করেন।

শেয়ার হস্তান্তরসহ সব প্রক্রিয়া শেষে শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই অতিরিক্ত ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত হয়ে যায়যায়দিনের প্রকাশকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

পরে ২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত হয়ে আবুল হাসান মো. আল ফারুক যায়যায়দিনের প্রকাশকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০১১ সালের ৯ জুন পত্রিকার প্রকাশকের পদত্যাগের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে প্রকাশকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরী যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই সময় থেকে সাঈদ হোসেন চৌধুরী দৈনিক যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকর হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার প্রকাশকের দায়িত্বভার থেকে পদত্যাগ করলেও ২০০৮ সালের ৬ মে পর্যন্ত বেতনভুক্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে তিনি স্বেচ্ছায় সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৬ মে ২০০৮ তারিখের যায়যায়দিন ও সমকালসহ একাধিক জাতীয় দৈনিকেও এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ পায়।

শফিক রেহমান পদত্যাগ করার পর শহীদুল হক খান এবং পরে বরুণ শংকর দৈনিক যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমতিক্রমে ২০০৮ সালের ২৩ নভেম্বর কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। উল্লিখিত সময় থেকে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি দখল করে নিতে বেশকিছু দুষ্কৃতকারী পত্রিকার প্রধান কার্যালয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এইচআরসি মিডিয়া ভবনে কয়েক দফা হামলা চালায়। এ ব্যাপারে গত ২৪ অক্টোবর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে ওই চক্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল করে নেয়।

এদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে যায়যায়দিন কার্যালয় ও প্রেস বেদখল হওয়ার পর বিধি মোতাবেক ডিসি অফিসকে অবহিত করে অন্য প্রেস থেকে যায়যায়দিন পত্রিকা ছাপানোর ব্যবস্থা করা হয়। পর পর দু’টি প্রেস পরিবর্তনের বিষয়টিও যথারীতি ডিসি অফিসকে জানানো হয়। কিন্তু ডিসি অফিস শফিক রেহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঠুনকো অজুহাতে যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে বলে অভিযোগ রয়েছে। অথচ এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরীর এক রিট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সবকিছুই সাঈদ হোসেন চৌধুরীর পক্ষে থাকবে বলে রায় দেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এজিএম (প্রশাসন) গোলাম ফারুক আলম, সিনিয়র ম্যানেজার নূরুল হক ও ডেপুটি ম্যানেজার (প্রশাসন) ইকবাল হোসেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজায় নিহত ৪০ ফিলিস্তিনি / বিমান হামলার পর স্থল অভিযানেও নামছে ইসরায়েল

যুবলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার তাজসহ গ্রেপ্তার ৪

স্বজনকে ‘উড়ন্ত চুমু’ দিলেন হাজী সেলিম

ফাজিল স্নাতকে ভর্তির সময় বাড়াল ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়

স্বামী-স্ত্রী মিলে করতেন মাদকের ব্যবসা

কাতার সফর শেষে দেশে ফিরলেন সেনাপ্রধান

‘জেদি বাচ্চার মতো আচরণ করছে ভারত’

শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচার হচ্ছে না কেন, ছাত্রশিবিরের প্রশ্ন 

কারাগারে পত্রিকার টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি কেটে আইনজীবীকে দিলেন হাজী সেলিম 

বৈঠক স্থগিত / ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বড় ঘোষণা

১০

স্বপ্ন নিয়ে’র উদ্যোগে আরও ২৫ জনের কৃত্রিম পা সংযোজন

১১

পেটেন্ট-ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরের নতুন ডিজি জাহাঙ্গীর

১২

অটোচালকদের সঙ্গে বিরোধ, ভোলায় বাস চলাচল বন্ধ

১৩

দিনের ভোট রাতে হওয়ার সুযোগ নেই : সিইসি

১৪

আলুর চিপস ঘিরে স্বাবলম্বী যে গ্রাম

১৫

সড়কে ঝরে গেল শৈশবের জবিতে পড়ার স্বপ্ন

১৬

ছয় বিভাগে বজ্রবৃষ্টির পূর্বাভাস

১৭

তোমাদের সবচেয়ে বেশি দরকার টাকা, মানুষ নয়: পাপারাজ্জিদের উদ্দেশে বিবার

১৮

সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে ব্যারিস্টার রাজ্জাকের জানাজা অনুষ্ঠিত

১৯

ভারতীয় পণ্য পরিবহনের সব পথ বন্ধ করল পাকিস্তান

২০
X