রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতালের মূল ফটকে জনসমক্ষে ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে প্রকাশ্য দিবালোকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
শুক্রবার (১১ জুলাই) এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল নূরুল ইসলাম সাদ্দাম এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদের পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে তারা বলেন, প্রকাশিত তথ্যমতে, মিটফোর্ড এলাকার রজনী ঘোষ লেনে ব্যবসায়ী মো. সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সন্ত্রাসী ও যুবদল নেতা মঈনের চাঁদাবাজির শিকার হয়ে আসছিলেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় মঈন ও তার সহযোগীরা প্রকাশ্য দিবালোকে সোহাগকে দোকান থেকে ধরে নিয়ে কুপিয়ে, পিটিয়ে রক্তাক্ত করে। একপর্যায়ে পাথর দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে এবং উলঙ্গ করে নির্মমভাবে নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
তারা আরও বলেন, যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক রজ্জব আলী পিন্টু ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবাহ করিম লাকির মদদে যুবদল নেতা মঈন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটানো শুধু আইনশৃঙ্খলার অবনতি নয়; বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতার বড় পরিচয়। আমরা এই পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে সারা দেশে একটি দল দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজি, হত্যা ও ধর্ষণের মতো নানা অপরাধে লিপ্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা দেড় শতাধিক মানুষকে হত্যার মধ্য দিয়ে একটি সন্ত্রাসী ও খুনি চক্র হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতারা বলেন, এমন জঘন্য ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড গত ৯ জুলাই প্রকাশ্যে সংঘটিত হলেও দু-একটি গণমাধ্যম ছাড়া মূলধারার গণমাধ্যমগুলো এ বিষয়টি নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই তা জনদৃষ্টিতে আসে। এটি গণমাধ্যমের দায়িত্বহীনতা এবং নির্দিষ্ট রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
আমরা ব্যবসায়ী মো. সোহাগের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। এই ঘটনাসহ সারা দেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে শুধু নামমাত্র বহিষ্কারের প্রহসন বন্ধ করে দলকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত করতে দলীয় কঠোর শৃঙ্খলাবিধি আরোপের আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন