তীব্র রূপ নেওয়া তাপপ্রবাহ ভোগানোর পর বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আবহাওয়া কিছুটা ঠান্ডা হয়েছে। তাতে চাহিদা কমায় লোডশেডিং পরিস্থিতি তুলনামূলক সহনীয় পর্যায়ে আছে। তবে সেই তাপপ্রবাহ আবারও ফিরছে বলে পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গোপালগঞ্জ, রাজশাহী ও পাবনা জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। দেশের অন্যান্য স্থানে তা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারা দেশে রাতে তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। তবে পরের ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়া সামান্য পরিবর্তন হতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।
এ পরিস্থিতিতে আবারও লোডশেডিং বাড়ার শঙ্কা করছে সাধারণ মানুষ। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদা বাড়লেও লোডশেডিং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে। বুধবার সারা দেশে দিনভর দেড় থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল। এদিন বিকেল ৪টা নাগাদ বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৭৫০ মেগাওয়াট। লোডশেডিং হয়েছে ১ হাজার ৯৭১ মেগাওয়াট।
চাহিদা বাড়লেও লোডশেডিং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণ হিসেবে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, রামপাল কেন্দ্রের জন্য কয়লা চলে এসেছে। আর পটুয়াখালীর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ২৬ বা ২৭ জুন চালু হতে পারে। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গণ্ডামারায় নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এসএস পাওয়ার ওয়ান লিমিটেডের দুটি ইউনিট আগামী জুনের মধ্যে পুরোদমে উৎপাদনে যাচ্ছে। ফলে সেখান থেকেও বিদ্যুৎ মিলবে। ভারতের আদানির দ্বিতীয় ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে; প্রয়োজন হলে তারাও বিদ্যুৎ দেবে। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ঝাড়খন্ডে স্থাপিত আদানির এ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের সক্ষমতা ৬৬০ মেগাওয়াট।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)বলছে, আগামী অর্থবছরে ২৫ দশমিক ৭ শতাংশ বিদ্যুৎ কয়লা থেকে উৎপাদন হবে। বর্তমানে এর পরিমাণ ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুতের ব্যবহার ৫১ দশমিক ৪৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫২ দশমিক ১৭ শতাংশ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ এবং আমদানি করা বিদ্যুতের পরিমাণ ১২ দশমিক ১ শতাংশ থেকে ১৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে গ্রাহক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে। ফলে লোডশেডিং থাকবে শূন্যের কোঠায়।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) তথ্য অনুযায়ী, গত দুইদিন খুলনা শহরে চাহিদার বিপরীতে ২০ শতাংশের মতো বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল। গেল বুধবার দুপুর ২টায় ওজোপাডিকোর আওতায় থাকা খুলনা, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলা শহর ও ২০টি উপজেলা শহর এলাকায় ৬৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ৫৯৮ মেগাওয়াট। ফলে ঘাটতি ছিল ৭২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।
মন্তব্য করুন