কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৭:৩৪ পিএম
আপডেট : ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:০৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

গণহত্যাকারীদের বিচার এ দেশে হবেই : ড. ইউনূস 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল, যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, যারা ইতোমধ্যে হত্যাকারী হিসেবে বিশ্বের কাছে স্বীকৃত তাদের বিচার এ দেশের মাটিতে হবেই।

মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তাকে সঙ্গে নিয়ে আমি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলিতে গিয়েছি। ক্যাম্পে অবস্থানরত ১ লাখ রোহিঙ্গা শিশু, কিশোর, নারী, পুরুষ সবার সঙ্গে একসঙ্গে ইফতার করেছি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি পৃথক অধিবেশন আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজক হতে এগিয়ে এসেছে। এর পাশাপাশি, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী জুলি বিশপকে এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় মুখ্য ভূমিকা পালনের জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছি। তিনি আমার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব বাংলাদেশ সফরে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য, রাজনৈতিক দলের নেতা ও তরুণদের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে সবাই জাতিসংঘের মহাসচিবকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গঠনের স্বপ্নের কথা জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পতিত স্বৈরাচারের নিপীড়নের বর্ণনা উঠে এসেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের রিপোর্টে। গত জুলাই-আগস্ট মাসে বাংলাদেশে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ওপর শেখ হাসিনা সরকার ও আওয়ামী লীগ যে দমন-নিপীড়ন ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে এর পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তারা। এই রিপোর্টে স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে যে, শেখ হাসিনা নিজেই নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীদের হত্যা করতে। বিগত সরকার, আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের সহযোগী গোষ্ঠী ও সংগঠন একত্রিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল। মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু। বিক্ষোভের সম্মুখসারিতে থাকার কারণে, আমাদের জুলাই-কন্যারা নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, এমনকি যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে।

ড. ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের রিপোর্ট পড়ে সবার গায়ের লোম দাঁড়িয়ে গেছে। কী ভয়াবহতা! কীভাবে একজন প্রধানমন্ত্রী নিজ দেশের নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার পর লাশ লুকিয়ে ফেলার নির্দেশ দিতে পারে! ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার জন্য তিনি পৃথিবীর সব নিষ্ঠুরতা ছাড়িয়ে গেছেন- এটাই জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার কার্যালয়ের এই রিপোর্টকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিবেদনে যে সুপারিশ করা হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার সে সুপারিশগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই, যারা গণহত্যায় জড়িত ছিল, যারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে, যারা ইতোমধ্যে হত্যাকারী হিসেবে বিশ্বের কাছে স্বীকৃত তাদের বিচার এ দেশের মাটিতে হবেই।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সড়ক দুর্ঘটনায় কাতারের ৩ কূটনীতিক নিহত

যেভাবে ধরা পড়লেন প্রেমিকাকে ‘ধর্ষণ’ করা সেই ২ যুবক

জামায়াতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল উপহার পেল ২৬ শিক্ষার্থী

সেনাবাহিনীকে নিয়ে যা বললেন জামায়াত আমির

যমুনা গ্রুপে বড় নিয়োগ

বিশ্বকাপের সময় পরিবর্তনের ইঙ্গিত

মসজিদে গিয়ে বিপাকে সোনাক্ষী 

মারা গেলেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী ডায়ান কিটন

বিয়ে কবে হতে পারে জানালেন ইশরাকের হবু স্ত্রী

পাকিস্তান-আফগানিস্তান কার সামরিক শক্তি কেমন

১০

চট্টগ্রাম-৭ আসনে জামায়াতের নতুন প্রার্থীর নাম ঘোষণা

১১

পাচারকালে ৩৮০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ

১২

গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে এমবাপ্পেকে নিয়ে বড় দুঃসংবাদ

১৩

রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা

১৪

জিসানের মাটিচাপা মরদেহ মিলল প্রতিবেশীর উঠানে

১৫

আশা’র আয়োজনে ‘সাহসী কন্যাদের গল্পকথা’ শীর্ষক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত

১৬

বিশ্বকাপের জন্য ২০ সদস্যের দল ঘোষণা বাংলাদেশের

১৭

ন্যায় ও আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করতে হবে : বাবর

১৮

ফিল্মফেয়ারে রেকর্ড গড়ল ‘লাপাতা লেডিস’

১৯

কলকাতায় অমিতাভের জন্মদিনে চল্লিশা পাঠ

২০
X