কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলায় গৃহবধূকে শিকলে বেঁধে ধর্ষণ, মাথার চুল কেটে দেওয়া এবং লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করে নারীর অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জানায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে ইমাম হোসেন নামের এক ব্যক্তি ও তার দুই সহযোগী দেশীয় অস্ত্র, লোহার শিকল ও তালা নিয়ে এক গৃহবধূর বাড়িতে হামলা চালায়। তারা মুখে ওড়না বেঁধে ও শিকল দিয়ে ওই নারীর হাত-পা বেঁধে ফেলে। এরপর এক মুখোশধারী ব্যক্তি তাকে ধর্ষণ করে এবং অপর সহযোগী তার মাথার চুল কেটে দেয়।
নির্যাতনের পর ঘর থেকে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র লুট করে নেয় তারা। এ ছাড়া ঘরে থাকা জামা-কাপড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। গৃহবধূর শাশুড়ির চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলেছে, এই ধরনের নৃশংস, লোমহর্ষক ও অমানবিক নির্যাতন নারীর প্রতি সামাজিক বিদ্বেষ ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতার একটি প্রতিচ্ছবি। সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও কন্যার প্রতি ধর্ষণসহ বিভিন্ন সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ব্যক্তিগত শত্রুতা নারী নির্যাতনের নতুন অজুহাতে পরিণত হয়েছে। মহিলা পরিষদ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানায়।
পাশাপাশি নির্যাতিত গৃহবধূ ও তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।
সংগঠনটি আরও বলেছে, নারীকে আজ আর ঘরেও নিরাপদ রাখা যাচ্ছে না। বাসস্থান, গণপরিবহন ও জনসমাগমস্থলে নারীরা প্রতিনিয়ত সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা রোধে নারীর প্রতি সহিংসতায় ‘শূন্য সহিঞ্চুতা’ নীতি গ্রহণ ও কার্যকর বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এছাড়া বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে।
মন্তব্য করুন