দেশের স্বার্থে শ্রমিকের স্বার্থে দ্রুত মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) সাধারণ সদস্যরা।
সোমবার (০৫ মে) রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনের সামনে বায়রা সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠান থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, ‘সৌদি আরবের পরই মালয়েশিয়া আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ম্যাজিকে যখন শ্রমবাজার খোলা হচ্ছে, যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা ডাকা হয়েছে ঠিক এই সময় একটি পক্ষ আমাদের প্রতিপক্ষ দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজ করছে। তারা শ্রমবাজারকে ধ্বংস করতে অপতৎপরতা শুরু করেছে।
বক্তারা আরও বলেন, সরকারের কাছে আমাদের আবেদন সেখানে স্বল্প খরচ ও সহজ শর্তে যাতে বাংলাদেশি শ্রমিকরা যেতে পারেন। আমরা ব্যবসায়ীরা দেশের স্বার্থে, দেশের মানুষের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমরা চাই, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে দেওয়া হোক। কোন রিক্রুটিং লাইসেন্সের মাধ্যমে কত শ্রমিক গেল, সেটা আমাদের বিষয় নয়। আমাদের স্বার্থ হলো দেশের শ্রমিক সেখানে যাক, তারা ভালো থাকুক, দেশ উপকৃত হোক ও দেশে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বৃদ্ধিপাক।’
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, প্রবাসীকল্যাণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা না হয়েও অন্য মন্ত্রণালয়ের একজন উপদেষ্টা তার স্ত্রীর এনজিওকে দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। তারা রামরু নামে একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ‘এন্টি সিন্ডিকেট’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা শ্রমবাজার খোলার জন্য সরকারের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার মিশন নিয়ে নেমেছে বলে আমাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বায়রার বহিষ্কৃত নেতা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর ফকরুল ইসলাম, মোস্তফা মাহমুদ, রিয়াজ আহমেদসহ কয়েক জন। আমরা তাদের এই দেশের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সভায় বক্তারা আরও বলেন, অন্য ১৩টি সোর্স কান্ট্রি মালয়েশিয়া সরকারের শর্ত মেনে নিয়ে তাদের শ্রমবাজার চালু রাখলেও বাংলাদেশে এক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। ফলে ১২ লাখ বাংলাদেশি কর্মীর যে চাহিদা মালয়েশিয়ায় রয়েছে সেই বাজার বাংলাদেশের হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বাংলাদেশ হারাতে পারে প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স।
বায়রার সাধারণ সদস্যরা বলেন, দেশ ও কর্মীদের সার্বিক স্বার্থে সরকার যে পদ্ধতিতে সরকার শ্রমবাজার উন্মুক্ত করবে, বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক হিসেবে সেটা যথাযথভাবে অনুসরণ করে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানে আমরা ঐক্যবদ্ধ ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকব।
মানববন্ধন স্মারকলিপি প্রধান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আল সুপ্ত ওভারসিসের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ মজুমদার, পূরবী ইন্টারন্যাশনালের মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, আর্থ স্মার্ট বাংলাদেশের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, ইএমএস ইন্টারন্যাশনালের এএমএস সাগর, তাসনিম ওভারসীসের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, আল আকাবা এসোসিয়েটের মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বিশ্বাস, আল গিফারীর সাগর মাহমুদ, স্কাইল্যান্ড রিক্রুটিংয়ের মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, আরমান এয়ার ইন্টারন্যাশনালের অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ সাজ্জাম হোসেন, ফ্রিডম ওভারসীসের কফিল উদ্দিন মজুমদার, এসএফ গ্লোবালের হাওলাদার ফোরকান উদ্দিন ও দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। মানববন্ধনে ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ডসহ কয়েক হাজার ব্যবসায়ী অংশ নেন।
মন্তব্য করুন