রাজারবাগের কথিত পীর দিল্লুর রহমান ও তার অনুসারীদের নিয়ে প্রতিবেদন করায় নাগরিক টিভির এক নারী সাংবাদিককে প্রাণনাশের হুমকি ও নিয়মিত লোকজন দিয়ে নজরদারি করায় নিরাপত্তারহীনতার কথা জানিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারী সাংবাদিকের নাম ফারাহ্ বিলকিস (টিভিতে পে অব যায় ফারাহ হোসাইন)। তিনি বেসরকারি টেলিভিশন নাগরিক টিভির সিনিয়র রিপোর্টার। মঙ্গলবার রাতে হাতিরঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
সাধারণ ডায়েরিতে ফারাহ্ উল্লেখ করেন, গত ২৩ ও ২৪ আগস্ট রাজারবাগ পীর দিল্লুর রহমান ও তার অনুসারীদের নিয়ে প্রতিবেদন সম্প্রচার করি। ওই প্রতিবেদনটি করার সময় রাজারবাগ পীরের অনুসারীরা তাদের ফুটেজ নিতে বাধা দেয় এবং সম্প্রচার যেন না হয় সেজন্য তারা আমার অফিসেও যায়। কিন্তু আমি প্রতিবেদনটি সম্প্রচার করি। তারা হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে বলে প্রতিবেদনটি যেন সম্প্রচার না করি। এর আগে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্টেও একটি প্রতিবেদন সম্প্রচার করেছিলাম রাজারবাগ পীর নিয়ে। তখন তারা রাতের বেলা আমাদের অফিসে যায় প্রতিবেদনটি সরিয়ে দেওয়ার জন্য। পরে অফিস নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিবেদনটি নামিয়ে ফেলে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলেই তারা মামলা করে ও নানাভাবে হয়রানি করতে পারে বলে আতঙ্ক বোধ করছি। এ ছাড়া প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই আমার ফেসবুক হ্যাক হয়। তখন তাদের সরাসরি ফোনে এ বিষয়টি জানাই। তখন তারা বলে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করতে।
এদিকে সাংবাদিককে হুমকির ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টারদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। বুধবার ডিআরইউ'র দপ্তর সম্পাদক কাওসার আজমের সই করা এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিবৃতিতে ডিআরইউ'র কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি মুরসালিন নোমানী ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে ডিআরইউ নেতারা বলেন, নিউজ প্রকাশের জেরে এর আগেও রাজারবাগ পীরপন্থিরা আমাদের সদস্যসহ বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও হুমকি দিয়েছেন। পেশাদার সাংবাদিককদের বিরুদ্ধে এ ধরনের হুমকি প্রদান এবং মামলা দেওয়া মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতার অন্তরায়।
ফারাহ্ বিলকিস বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের হুমকি প্রদানকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। একইভাবে গণমাধ্যমকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
মন্তব্য করুন