‘সকালে পরীক্ষা, রাতেই ফল’ প্রকাশ নিয়ে সমালোচিত নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের পর এবার ঘটনার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে উন্নয়ন শাখার যুগ্ম সচিব বরাদ হোসেন চৌধুরীকে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন বেসরকারি কলেজ শাখার উপসচিব আ. কুদ্দুস এবং সিনিয়র সহকারী সচিব জাবের মো. সোয়াইব। তাদের আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ডিআইএর (পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিপ্তর) অভ্যন্তরীণ নিয়োগের জন্য একটি পরীক্ষা নেওয়া হয় গত ৯ মে। ওইদিন সকালে পরীক্ষা নিয়ে ওইদিন রাতেই সে ফল প্রকাশ করা হয়।
ডিআইএ নিয়োগের জন্য প্রথম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় ২০২৩ সালের ২১ মে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১০ ধরনের পদে মোট ৩০ জনকে নিয়োগের কথা উল্লেখ করা হয়। ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ১১ ধরনের পদে ৩৩ জনকে নিয়োগের কথা উল্লেখ ছিল। এসব পদের জন্য আবেদন করেন ২৪ হাজার ১১২ চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু স্বল্প সময়ে পরীক্ষা হওয়ায় অংশ নেয় ৩ হাজার ১০৫ চাকরিপ্রার্থী। ওইদিন রাতেই সব চাকরিপ্রার্থীর খাতা মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা হয়।
এ পদে নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ ঘিরে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। অভিযোগ উঠে, ৯ মে সকালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয় সেদিন রাতেই। ব্যাপক সমালোচনার মুখে ১৯ মে সেই পরীক্ষা ফল স্থগিত করা হয়। সে ঘটনার তদন্তে এবার তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, অডিটর, সাঁটলিপিকার কাম কম্পিউটার অপারেটর, উচ্চমান সহকারী ও অফিস সহায়ক- এই চার পদে ৩ হাজার ১০৫ পরীক্ষার্থী অংশ নেন। রাজধানীর তিনটি কেন্দ্রে পরীক্ষা শেষে রাতেই ১৫২ জনের ফল প্রকাশ করে ডিআইএ কর্তৃপক্ষ। ডিআইএর একাধিক কর্মকর্তা ও চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ‘পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতেই তড়িঘড়ি করে ফল প্রকাশ করা হয়।’ প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনায় ডিআইএ নিজেরাই থাকায় স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে ডিআইএর বর্তমান পরিচালকের চাকরির মেয়াদ তিন মাসেরও কম থাকায় দ্রুত নিয়োগ চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে বলে দাবি করছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। অভিযোগ আছে, এবারের ডিপিসি কমিটিতে দায়িত্ব দেওয়া হয় একজন শিক্ষা পরিদর্শককে, যেখানে সাধারণত দায়িত্ব পান উপপরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা।
ডিআইএর নিয়োগ কার্যক্রম ঘিরে এই প্রথম নয়, ২০২৩ সালের ২১ মে প্রথম নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এবং পরে ২০২৪ সালের ১০ অক্টোবর পুনঃবিজ্ঞপ্তির পর থেকে এই সংস্থার নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন উঠেছে।
মন্তব্য করুন