মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর ২০২০ সালের অক্টোবরে প্রদর্শক পদসহ ৪ হাজার শূন্য পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। তবে মৌখিক পরীক্ষা এক বছর পেরিয়ে গেলেও অজানা কারণে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়নি। এই দীর্ঘসূত্রতার কারণে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হাজারো তরুণ-তরুণীর মাঝে ক্ষোভ বাড়ছে।
প্রদর্শক ফলপ্রত্যাশীরা বলেন, ২০২০ সালের বিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পরীক্ষাসহ গত বছরের জুন মাসে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। অথচ এখনো ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। আমরা দ্রুত ফল প্রকাশের দাবি করছি।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর মাউশি ১০ম থেকে ২০তম গ্রেড পর্যন্ত মোট ৪ হাজার ৩২টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২০২১ ও ২০২২ সালে ধাপে ধাপে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরে ১১ থেকে ২০তম গ্রেডের পদের ফল প্রকাশ ও নিয়োগ সম্পন্ন হলেও ১০ম গ্রেডের প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী, সহকারী লাইব্রেরিয়ান কাম ক্যাটালগার ও ল্যাব সহকারীর ফলাফল দীর্ঘসূত্রতায় পড়ে যায়।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর আবুল উবায়েদ মুহাম্মদ বাসেত ঠাকুর জানান, জনবল সংকটের কারণে কলেজের দৈনন্দিন কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। সরকারি একজন কর্মচারীর মাধ্যমে যে কাজগুলো বিশ্বস্তততার সঙ্গে করানো যায়, একজন বেসরকারি কর্মচারীর কাছে সে ধরনের বিশ্বস্ততা ও দক্ষতার আশা করা যায় না। যে পদগুলো ফাঁকা রয়েছে সে পদের বিপরীতে বেসরকারি লোককে দৈনিক ভিত্তিক কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করতে হচ্ছে। এতে কলেজ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অন্যদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারজানা বলেন, আমরা এক বছর আগে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছি। দীর্ঘদিন ধরে কর্তৃপক্ষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি ফলাফল জানতে, কিন্তু জানতে পারিনি। সরকারি চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে, তাই আমরা উদ্বিগ্ন।
জনপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন সরকারি কলেজের প্রদর্শক, গবেষণা সহকারী (কলেজ), সহকারী গ্রন্থাগারিক কাম ক্যাটালগার ও ল্যাবরেটরি সহকারী পদে কোটা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে।
তবে এ বিষয়ে মাউশির সাধারণ প্রশাসন শাখার উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে নির্দেশনা পেলে সেটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রদর্শক পদের ফলাফলপ্রত্যাশীরা আরও জানান, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে ১০ম গ্রেডের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় এবং মে-জুন মাসে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। তারা একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করে ফলাফল প্রকাশের দাবি জানালেও প্রতিবারই দেওয়া হয় আশ্বাস। অনেকের বয়স ৩২ পার হয়ে গেছে এখন আর কোনো সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করার সুযোগ নেই।
মাউশির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আজাদ খান জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় দৈনিক দেশ রূপান্তরে শুক্রবার এ খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন