নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রস্তুত হয়নি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা হালনাগাদ ও মূল্য নির্ধারণ প্রতিবেদন। বুধবার (২০ আগস্ট) এই প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল ১৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি টাস্কফোর্স কমিটির। এ অবস্থায় আরও দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছে কমিটি।
বুধবার (২০ আগস্ট) টাস্কফোর্সের একাধিক সদস্যের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্মসচিব মো. মোজাম্মেল হোসেন খান বলেন, টাস্কফোর্স গঠনের পর থেকে এখন পর্যন্ত একটিমাত্র বৈঠক হয়েছে। অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা হালনাগাদ এবং দাম নির্ধারণ করতে হলে খাত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করা দরকার। কাজটি জটিল, তাই সময় প্রয়োজন। আমরা ইতোমধ্যে আরও সময় চেয়েছি। শুক্রবার ঢাকায় আসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধিদল। তারাও পরামর্শ দেবে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন প্রস্তুত হতে পারে।
তিনি বলেন, উৎপাদকদের জন্য ন্যায্য মুনাফা নিশ্চিত করে যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করা হবে এবং তা যেন সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে থাকে, সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে। সরকার এই কাজে ডব্লিউএইচও এবং ইউনিসেফকে যুক্ত করেছে। তবে টাস্কফোর্সে ওষুধ প্রস্তুতকারকদের কোনো প্রতিনিধি না রাখায় তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে অ্যান্টিবায়োটিক, নিউমোনিয়া, সর্দি-জ্বর, উচ্চ রক্তচাপ, গ্যাস্ট্রিক, আলসার, কৃমিনাশক, ব্যথানাশক, হাঁপানি ও ভিটামিনসহ ২৮৬টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রণয়ন করা হয়। তবে সেসময় মাত্র ১১৭টি ওষুধের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল। প্রতি বছর তালিকা হালনাগাদ করার কথা থাকলেও গত ৯ বছরে কার্যকর কোনো তদারকি ছিল না।
১৯৮২ সালের ওষুধ নীতিতে ২৮৬টি অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা প্রথম অন্তর্ভুক্ত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এই তালিকা প্রতি বছর হালনাগাদ করার কথা থাকলেও ২০০৮ এবং ২০১৬ সালে মাত্র দুবার তা হালনাগাদ করা হয়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ এ তালিকার যথাযথ সুফল পায়নি। কমিটি ওষুধের কার্যকারিতা, নিরাপত্তা, প্রয়োজনীয়তা এবং ডব্লিউএইচওর নির্দেশনা বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে গত মাসে ওষুধ-সংশ্লিষ্ট চারটি কমিটি গঠন করা হলেও ওষুধ প্রস্তুতকারকদের কোনো প্রতিনিধিত্ব না থাকায় সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, অতিরিক্ত মুনাফা নিয়ন্ত্রণে একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টাস্কফোর্সের তিনটি মূল দায়িত্ব থাকবে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের তালিকা হালনাগাদ করা, তালিকাভুক্ত ওষুধের মূল্য নির্ধারণ এবং বাকি ওষুধগুলোর জন্য একটি সমন্বিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি প্রণয়ন করা। তিনি বলেন, প্রস্তুতকারীরা যেন নৈতিকভাবে মুনাফা করতে পারে, সেটাও বিবেচনায় রাখা হবে।
মন্তব্য করুন