জুলাই ছাত্র আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে ও জুলাইয়ের চেতনাকে সমুজ্জ্বল রাখতে ঢাকার ওসমানী উদ্যানে নির্মিত হবে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’। রোববার (১২ অক্টোবর) স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
জানা যায়, স্থানীয় সরকার বিভাগের অর্থায়নে ৪৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ বাস্তবায়ন করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। জুলাই স্মৃতিস্তম্ভটি একটি বৃত্তাকার বেদির ওপর নির্মিত হবে। স্তম্ভটির দুই পাশে ৪টি করে ৮টি আয়তাকার পারসিভড কলাম এবং মাঝখানে একটি স্বতন্ত্র বৃত্তাকার কলাম থাকবে। স্বতন্ত্র বৃত্তাকার কলামটির উচ্চতা হবে ৯০ ফুট। স্মৃতিস্তম্ভে প্রবেশের জন্য দুটি প্রবেশপথ ও প্রবেশপথে এপিটাফ থাকবে। পুরো স্মৃতিস্তম্ভ এলাকায় কৃষ্ণচূড়া জাতীয় বৃহদাকার ফুলের চারা রোপণ করা হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের নকশা ও নির্মাণে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের স্মৃতি ও জুলাই ইতিহাসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’
জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে কোনো কাজ করতে গেলে একটি মহল বাজেট নিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘এসব প্রশ্ন জনগণের টাকার প্রতি দায়বদ্ধতা নয় বরং মূলত রাজনৈতিক অপচেষ্টা। কারণ, বিগত ফ্যাসিবাদের সময় এসব প্রশ্ন ছিল না। ফ্যাসিবাদের আমলে ভাস্কর্য হতো, এর থেকেও ছোট অবকাঠামো হতে দেখেছি, যেগুলোর বাজেট ৩০০ থেকে ৪০০ কোটি টাকা পর্যন্ত খরচ হয়েছে। কিন্তু তখন তাদের এমন কথা বলতে দেখতাম না।’
বিগত আমলের শুধু পরামর্শক ফি দিয়েই এখন প্রায় পুরো প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সব অপচেষ্টা মোকাবিলা করেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আহত ও শহীদদের আত্মত্যাগের স্মৃতি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।’
ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া বলেন, ‘যখন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মৃতি সংরক্ষণের কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, তখন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টার উদ্যোগ ও নির্দেশনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এই জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের গৌরবময় কাজ হাতে নিয়েছে।’
স্মৃতিস্তম্ভের পাইলিং কাজ শেষ পর্যায়ে উল্লেখ করে প্রশাসক বলেন, ‘চলতি বছরের ডিসেম্বরেই এই নির্মাণকাজ শেষ হবে।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা শহীদদের স্মরণে দোয়া করেন এবং একটি ঔষধি গাছ রোপণ করেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদীসহ স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন