শ্রম আইনে এখনো গৃহকর্মীদের স্বীকৃতি দেয়নি। ২০১৫ সালে গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি প্রণয়ন হলেও এই পর্যন্ত তা আইনে পরিণত হয়নি। গৃহশ্রমিকের প্রতি মর্যাদাপূর্ণ সামাজিক আচরণ, তাদের উন্নত জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নীতিগত উদ্যোগ, নাগরিক সমাজের সংশ্লিষ্টতা এবং গণসচেতনা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
‘সময় এখন গৃহকর্ম ও গৃহকর্মীর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে সোমবার (২ অক্টোবর) সকালে ‘গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিতকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। দুঃস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র (ডিএসকে) ও ইউসেপ বাংলাদেশের আয়োজনে সুনীতি প্রকল্পের সহযোগিতায় রাজধানীর মিরপুরে ইউসেপ বাংলাদেশের কনফারেন্স কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
স্বাগত বক্তব্যে ইউসেপ বাংলাদেশের প্রোগাম অ্যান্ড ইনোভেশনসের পরিচালক মোহা. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সুনীতি’ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গৃহকর্মীদের জীবন দক্ষতা বাড়াতে ও অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী করায় ভূমিকা রাখবে।
ডিএসকের যুগ্ম পরিচালক-প্রকল্প ফজিলা খানমের সঞ্চালনায় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য দেন নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল অ্যাসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূর, একাত্তর টেলিভিশনের ফারজানা রূপা, রেডিও স্বাধীনের হেড অব প্রোগামের শাকিল আহমেদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন ইউসেপ বাংলাদেশের নাজমুন নাহার, ডিএসকের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, অক্সফাম কানাডার মিল অফিসার রিচা সরমা, অক্সফাম বাংলাদেশের প্রকল্প সমন্বয়কারী তারেক আজিজ।
সুনীতি প্রকল্পবিষয়ক উপস্থাপনা করেন ডিএসকের অ্যাডভোকেসি অফিসার রাজশ্রী গায়েন। তিনি বলেন, ১৭ হাজার ৩২০ জন গৃহকর্মীকে নিবন্ধন করা হয়েছে। ৮৬৭টি গৃহকর্মীর দল গঠন করা হয়েছে। ১১ হাজারের বেশি গৃহকর্মীকে জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত দুজন গৃহকর্মী মোহাম্মদপুরের কুলসুম ও হাজারীবাগের নুসরাত জাহান আলো তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। কুলসুম বলেন, গৃহকর্তা, গৃহকর্ত্রী আগে বুয়া ডাকত, এখন নাম বলে সম্বোধন করে। আগে সাপ্তাহিক ছুটি ছিল না। এখন ছুটি পাই, স্বাস্থ্যসেবার অধিকার পাচ্ছি। গৃহকর্মী সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন হলে আমরা আমাদের অধিকার পাব।
শোভন কাজ ও কর্মক্ষেত্রে জেন্ডার সহিংসতা : বাংলাদেশের নারী গৃহশ্রমিকদের ওপর একটি গবেষণা’ ওঠে এসেছে, ৬৭ শতাংশ গৃহকর্মী মানসিক, ৬১ শতাংশ মৌখিক, ২১ শতাংশ শারীরিক এবং ৪ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছে। সমাপনী বক্তব্য দেন ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আবদুল করিম।
মন্তব্য করুন