বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে আজ বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হলো লোকসঙ্গীতের প্রবাদ পুরুষ বিচারগানের সম্রাট বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হালিম বয়াতির ৯৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা ও সংগীত অনুষ্ঠান। তার ভক্ত ও অনুসারীদের উপস্থিতিতে মিলনায়তন পূর্ণ দর্শকরা উপভোগ করেন আব্দুল হালিম বয়াতির লেখা গান ও সুর।
গ্রামবাংলার মানুষের আবেগ, চিরায়ত সুর অনুভূত হয় আব্দুল হালিমের কণ্ঠে। অনুষ্ঠানের শুরুতেই অতিথি আলোচকবৃন্দকে উত্তরীয় পরিয়ে স্বাগত জানান সাধক হালিম বয়াতির সন্তানরা। আলোচনা পর্বে স্বাগত বক্তব্য দেন হালিম একাডেমির পরিচালক ও আবদুল হালিম বয়াতির পুত্র মো. নিশান হালিম। প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এর বিশিষ্ট লেখক ও ট্রাস্ট্রি মফিদুল হক। এ ছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও লোকসংস্কৃতি গবেষক ড. সাইমন জাকারিয়া।
সভাপতির বক্তব্যে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, লালন হাছনসহ আমাদের গুরুত্বপূর্ণ বাউলদের মাধ্যমে সমৃদ্ধ লোকশিল্পের ধারাকে সক্রিয় রেখেছেন আব্দুল হালিম বয়াতির মতো অসংখ্য লোক কবিরা। শিল্পকলা একাডেমি লোকসংস্কৃতি নিয়ে বহুমুখী সাংস্কৃতিক আয়োজন চালিয়ে যাচ্ছে, আপনারাও লোকশিল্পের প্রসারের ক্ষেত্রে নিজেদের অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখবেন এটাই প্রত্যাশা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দ্বৈত নৃত্য পরিবেশন করেন সানজিদা আক্তার কাজল ও নুজহাত ফাতিমা আওয়াল। এরপর পরিবেশিত হয় সমবেত সারিন্দা বাদন। সংগীত পরিবেশন করেন ওয়াসিম কবির পলাশ, আলেয়া বেগম, সৈয়দ আশিকুর রহমান, সুলতানা ইয়াসমিন লায়লা, শফি মন্ডল, হালিমা পারভিন ও অসীম রায় এবং রিপন সরকার/ হৃদয় সৈকত।
লোক সঙ্গীতের প্রবাদ পুরুষ আবদুল হালিম মিয়া ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের ১৫ কার্তিক বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলাধীন বড় দোয়ালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। মাত্র ৭ বছর বয়সে শিশু হালিম সঙ্গীতের আকাশে ধূমকেতুর মতো আকস্মিকভাবে আবির্ভূত হয়ে ধ্রুবতারার ন্যায় স্থায়ী আসন করে নেন। অতপর তিনি বঙ্গ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে সঙ্গীত পরিবশন করে বেড়ান। তিনি কারও কাছে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেননি। স্বয়ং শিক্ষিত এই শিল্পী স্বক্রীয়তায় সমুজ্জ্বল। চির বিজয়ী শিল্পী হিসেবে জনমনে শ্রদ্ধাসনে সমাসীন।
মন্তব্য করুন