আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকার দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে অবিলম্বে তা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন প্রখ্যাত শ্রমিকনেতা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম খান নাসিম।
আজ শুক্রবার (৩ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে শ্রমিক দল নেতারা উল্লেখ করেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রমিকদের জীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিল। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিকে উপেক্ষা করার কারণে শ্রমিকরা আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছে। শ্রমিকদের এই আন্দোলনকে ন্যূনতম সম্মান ও সমর্থন না করে তাদের ওপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করে হত্যা ও আহত করার ঘটনা সরকার, সরকারি দল ও মালিক পক্ষ দায় এড়াতে পারবে না। দুই বছর আগে ও বর্তমানের বাজারদর, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশ-পাতাল পার্থক্য। দুই বছর পূর্বের তুলনায় বর্তমানের ১ ডলারের দাম ৪০-৪৫ টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় মালিকদের মুনাফা বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে শ্রমিকরা নিঃস্ব হচ্ছে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল গত ‘মে দিবসের শ্রমিক সমাবেশ’ ও ‘৩০ সেপ্টেম্বরের শ্রমিক কর্মচারী জাতীয় কনভেনশন’-এর ঘোষণায় পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকার প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৬ মাস মেয়াদি মজুরি বোর্ড গঠন করা হয়, যা গত ৯ সেপ্টেম্বর মজুরি বোর্ডের মেয়াদ শেষ হলে সরকারের পক্ষ থেকে মজুরি বোর্ডের মেয়াদ ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের প্রশ্ন ৬ মাসে মজুরি বোর্ড শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি না করে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো- প্রকারন্তরে মজুরি বোর্ড সময় ক্ষেপণ করে অবৈধ সরকারকে আগামী নির্বাচনের বৈতরণী পার হওয়ার কূটকৈৗশল নিয়ে মালিকদের পক্ষ নিয়েছে।
আন্দোলনে এখন পর্যন্ত গাজীপুরে পুলিশের গুলিতে দুজন নিহত ও ঢাকার মিরপুরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় শত শত শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহাত হয়েছে। এর জন্য সরকার, সরকারি দল ও মালিক পক্ষে সরাসরি দায়ী। অন্যদিকে বিজিএমইএ নেতারা পোশাক শ্রমিকদের দাবি ও আন্দোলনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে ‘কাজ না করলে বেতন পাবেনা শ্রমিকরা’ ও ‘বন্ধ করে দেওয়া হবে কারখানা’ বলে দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে। এত কিছু করার পরেও শ্রমিকদের দমিয়ে রাখতে পুলিশ প্রশাসন ও মালিকপক্ষ পোশাক শ্রমিক নেতারা ও আন্দোনরত নিরীহ শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলার দিয়ে হয়রানি করছে, যা উদোরপিণ্ডি বুদুর ঘারে চাপানোর শামিল।
বিবৃতিতে শ্রমিকদল নেতারা নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ এবং দায়ীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করে শ্রমিকদের দাবিকৃত সর্বনিম্ন ২৫ হাজার টাকা মজুরি দ্রুত মেনে নিয়ে বাস্তবায়নের দাবি জানান।
মন্তব্য করুন