আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের নদ-নদী রক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করাসহ ৯ দাবিতে মানববন্ধন করেছে প্রকৃতিবাদী কয়েকটি সংগঠন।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নদী ও প্রকৃতি রক্ষার সংগঠন নোঙর ট্রাস্ট আয়োজিত এ মানববন্ধনে সংগঠনের চেয়ারম্যান সুমন শামসের সভাপতিত্বে দাবিগুলো তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন লোকশিল্পী ও গবেষক ইমরান উজ-জামান, পরিবেশবাদী লেখক ও প্রকাশক নাজমুল হুদা রতন, ফজলে সানি, জাহাঙ্গীর নিপু, আমিনুল হক চৌধূরী, আহমেদুর রহমান রুমি, সংস্কৃতি কর্মী আব্দুস সামাদ, প্রকাশক কামাল মুস্তফা প্রমুখ।
৯ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের সব নদী, খাল, বিল, হাওড়-বাঁওর, পুকুর, জলাশয়সহ প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণের অঙ্গীকার অন্তর্ভুক্তি এবং বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ করা। আদালতের নির্দেশ মেনে ১৯৪০ সালের সিএস নকশা অনুযায়ী সব নদী, শাখা নদী ও খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং সীমানা পিলার স্থাপন করে পুনরায় নদীপ্রবাহ নিশ্চিত করা।
রাজধানীর হারিয়ে যাওয়া ৪৭টি খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ করে বৃত্তাকার নৌপরিবহন চালু, নদীর অপরিকল্পিত বাঁধ ও স্বল্প উচ্চতার সেতু-কালভার্ট সংস্কার করে পরিবহনযোগ্য নৌপথ তৈরি।
নদী দখল-দূষণকারী, বালুখেকো, ভূমিদস্যুদের নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য ঘোষণা, সমুদ্র-পাহাড়, বনভূমি, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ, দেশের স্বার্থে জাতিসংঘ পানিপ্রবাহ কনভেনশন ১৯৯৭ অনুস্বাক্ষর করে সব অভিন্ন নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের বাধা অপসারণ, ফারাক্কা-তিস্তাসহ ৫৪টি আন্তর্জাতিক নদীর পানির ন্যায্য বণ্টন এবং দেশের নৌপথে নিহত সব শহীদের স্মরণে আগামী দিনের নৌ-নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ২৩ মে ‘জাতীয় নদী দিবস’ ঘোষণা করে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা।
দাবির পাশাপাশি বক্তারা বলেন, নদীমাতৃক বাংলাদেশে গত ৫২ বছর ধরে নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর-জলাশয় ভরাট করে দখলের প্রতিযোগিতা বেড়েই চলছেই। আবার একদিকে উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি সরিয়ে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশের নদীগুলোতে দেখা দিয়েছে পানি সংকট অন্যদিকে দেশের মধ্যেই অতিরিক্ত পলি জমে নদীগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। মনুষ্য সৃষ্ট নানা ধরনের শিল্পবর্জ্যের দূষণে প্রাণবৈচিত্র্য এখন হুমকির মুখে। পাশাপাশি কিছু স্বার্থান্বেষী মহল নানা প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে নদী ভরাট করে অথবা বালু উত্তোলন করে নদীগুলোকে ধ্বংস করেই চলছে, কোথাও আবার একাধিক নদী ব্যক্তিমালিকানায় দখলে রয়েছে, এর অবসান হলেই কেবল দেশের পরিবেশ বিপর্যয় রোধ করা যাবে, বলেন তারা।
মন্তব্য করুন