জলবায়ু ন্যায্যতা আদায় ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে যুবকদের স্বীকৃতি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাভিত্তিক সমাধানকে উৎসাহিত করতে হবে। আজ সোমবার, (২৭ নভেম্বর) বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস) এবং বারসিকের যৌথ আয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘দুবাই জলবায়ু সম্মেলন (কপ-২৮) : জনগণের প্রস্তাবন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন।
ক্যাপস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য প্রদান করেন বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ।
বক্তব্যে পাভেল পার্থ বলেন, বিশ্বের ধনী ও উন্নত দেশের প্রায় ১ ভাগ মানুষ যে পরিমাণ কার্বন নির্গমণ করে সেই পরিমাণ কার্বন নির্গমন করে বিশ্বের প্রায় ৬৬ ভাগ মানুষ। সেদিক থেকে বাংলাদেশের কার্বন নির্গমনের পরিমাণ খুবই নগণ্য। তারপরও প্রতিনিয়ত আমাদের দেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিভিন্ন দুর্যোগ ও বিপদাপন্নতার শিকার হচ্ছে। তাই, এবারের জলবায়ু সম্মেলনের মাধ্যমে আমাদের দেশের জন্য লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিলের ইকোনমিক এবং নন ইকোনমিক উভয় নিশ্চিত করতে হবে। কারণ ইকোনমিক লসের সাথে নন-ইকোনমিক লস ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
তিনি বলেন, এ ছাড়াও আমাদের নিজেদেরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সব পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে তরুণ-যুবদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আবাসন, শিক্ষা, নিরাপদ পানি, বিদ্যুৎ ও নিরাপদ জ্বালানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে উন্নত রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।
সভাপতির বক্তব্যে ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জলবায়ু সম্মেলন এমন একটি প্লাটফর্ম, যেখানে সব দেশই আসে জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় একত্র হয়ে কাজ করার জন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা আজকের এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের কাছে আমি অনুরোধ করব আপনারাও দেশের সব অঞ্চলের মানুষের দাবিগুলো জলবায়ু সম্মেলনে তুলে ধরুন। মূল জলবায়ু সম্মেলন হয়তো কয়েক দিনের কিন্তু ন্যায্যতা আদায়ের জন্য আমাদের সারা বছরই কাজ করতে হবে। জলবায়ু ন্যায্যতা আদায় ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে যুবকদের স্বীকৃতি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাভিত্তিক সমাধানকে উৎসাহিত করতে হবে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সাউথ এশিয়ান ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরামের সভাপতি কায়সার আহমেদ বলেন, এ বছর বার্ষিক তাপমাত্রা প্রায় সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এবং ভবিষ্যতে এটি আরও তীব্র হওয়ার আশংকা রয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে আমরা চাই এ বছরের জলবায়ু সম্মেলনেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা কমিয়ে আনার বিষয়টি আরও কার্যকর করতে হবে।
দৈনিক কালের কণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নিখিল ভদ্র বলেন, জলবায়ু ন্যায্যতার অভাবে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাই জলবায়ু ন্যায্যতা ও ক্ষতিপূরণের দাবি নিশ্চিত করতে হবে; এটি কোনো ঐচ্ছিক বিষয় নয়, এটি একটি ন্যায্য অধিকার।
আরও বক্তব্য প্রদান করেন বারসিকের সমন্বয়ক মো. জাহাঙ্গীর আলম, বারসিকের প্রকল্প পরিচালক মো. কামরুজ্জামান সাগর, ক্যাপসের লিগ্যাল ডিরেক্টর ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট রাশেদুজ্জামান মজুমদার, পরিবেশ উদ্যোগের গবেষণা সমন্বয়ক ইঞ্জি. মো. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারী।
মন্তব্য করুন