মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

১৯ দিন পর দেশে আসা প্রবাসীর লাশ রেখে পালালেন বাবা-মা-ভাই

প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের জানাজায় এলাকাবাসী। ইনসেটে আনোয়ার হোসেন। ছবি : কালবেলা
প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের জানাজায় এলাকাবাসী। ইনসেটে আনোয়ার হোসেন। ছবি : কালবেলা

দুবাইয়ে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতে গিয়ে মাথায় নির্মাণসামগ্রী পড়ে মারা যান যুবক আনোয়ার হোসেন (৩৮)। মৃত্যুর ১৯ দিন পর শনিবার রাতে মরদেহ গ্রামের বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার গাবেরগ্রামে আসে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে নিহত যুবকের বাবা, সৎমা ও সৎভাইয়েরা সেই লাশ ফেলে পালিয়ে যান।

প্রবাসী আনোয়ার হোসেন গাবেরগ্রাম চৌরাস্তা মোড় এলাকার শাজাহান প্রামাণিক ওরফে সাজা বাঘার ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই বছর আগে আনোয়ার হোসেন দুবাই যান। সেখানে তিনি কনস্ট্রাকশনের কাজ করতেন। গত ৩ ডিসেম্বর দুপুরে ভবন নির্মাণের কাজ করার সময় ওপর থেকে নির্মাণসামগ্রী পড়ে আনোয়ার ঘটনাস্থলেই মারা যান। প্রায় ১৯ দিন পর তার মরদেহ শনিবার রাতে নিজ বাড়িতে আনা হয়।

স্থানীয়দের ভাষ্য, আনোয়ার হোসেনের বাবা শাজাহান প্রামাণিক দুটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর সন্তান আনোয়ার হোসেন। শাহজাহানের দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন সন্তান। আনোয়ার হোসেনের ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। তাদের নামে জমি দিতে হবে— এমন প্রতিশ্রুতি দিতে হবে ভয়ে শাজাহান, তার স্ত্রী ও ছোট ছেলে সাগর বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। বড় ছেলে সবুজ আহমেদ আগে থেকেই বাড়িতে ছিলেন না। এমন ঘটনায় হতবাক ও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। গাবেরগ্রাম এলাকার আশরাফুল নামে একজন বলেন, আনোয়ার হোসেন ছোট থেকেই কষ্ট করে বড় হয়েছেন। তার বাবা শাজাহান দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই ঘরে তিন ছেলেমেয়ে হয়। তাদের নামে জমি লিখে দেন শাজাহান। বড় ছেলে আনোয়ার হোসেনের নামে কোনো জমিজমা দেননি। ছেলের লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার কারণ, তাদের ভয় ছিল আনোয়ারের দুটি ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাদের নামে যদি জমি লিখে দিতে হয়! এটি খুবই দুঃখজনক ঘটনা।

আনোয়ার হোসেনের চাচা জাহিদুল বলেন, আমার বড় ভাই তার দ্বিতীয় দিকের ছেলেমেয়েদের জমি লিখে দিয়েছে অনেক আগেই। জানাজায় না আসার কারণ আনোয়ারের দুই ছেলেমেয়ে রয়েছে। তাদের তো কিছুই নেই। জানাজায় লোকজন যদি বলে আনোয়ারের ছেলেমেয়েদের নামে জমি লিখে দিতে হবে, এ ভয়েই তারা পালিয়ে গেছেন। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক।

এ বিষয়ে আনোয়ারের সৎভাই সবুজ আহমেদ কালবেলাকে বলেন, আমার বাবা যদি আমার মৃত ভাইয়ের ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীকে জমি লিখে না দেন, তাহলে আমার মামারা সবাই মিলে আমার বাবাকে আক্রমণ করবেন। এ আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সবাই পালিয়ে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যেন মৃত ব্যক্তির লাশকে পুঁজি করে কোনো দাবি আদায় করতে না পারে, এ কাজের বিরোধিতা করার জন্যই জানাজায় অনুপস্থিত ছিলাম।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের জেলা সহসভাপতিসহ গ্রেপ্তার ৩

আওয়ামী লীগের ৮ নেতার পদত্যাগ

দগ্ধ বেলালকে দেখতে লক্ষ্মীপুরে তারেক রহমানের উপহার নিয়ে রিজভী

পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

হিন্দু যুবককে পিটিয়ে মারলেও সরকারের অবস্থান দেখা যায়নি : ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি

সৌদিতে এক বছরে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর

আহমদ ছফার নামে সড়কের নামকরণ

সীমান্তে সাড়ে ২১ কোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ

সড়কের এক কিমি যেন মরণফাঁদ, ছয় মাসে প্রাণহানি ১১

‘কোটি মানুষের বুক ভেদ করে তারেক রহমানের ক্ষতি করার শক্তি কারও নেই’

১০

শ্রীলঙ্কায় অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য জরুরি বার্তা

১১

এক রাতে দুই পরিবারের ১০ গরু চুরি

১২

শরিফ ওসমান হাদির কবরের পাশে চরমোনাই পীর

১৩

স্টেট ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন / কেবল ডিগ্রি নয়, সক্ষমতা ও শৃঙ্খলাও জরুরি : আসিফ নজরুল

১৪

হিন্দুদের পাশে থাকবে বিএনপি : প্রিন্স

১৫

পাঁচ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

১৬

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থি ৬ ডিনের পদত্যাগ

১৭

কারাগারে বসে মনোনয়নপত্র নিলেন জাপার সাবেক এমপি

১৮

দিনাজপুরে হিম হাওয়ায় কনকনে শীত অনুভূত

১৯

গণঅধিকার পরিষদকে যে ২ আসনে আশ্বাস দিল বিএনপি

২০
X