এবার বাংলাদেশের কাছে ড্যাশ-৮ মডেলের এয়ারক্র্যাফট বিক্রি করতে চায় কানাডা। পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন উড়োজাহাজের ইঞ্জিন মেরামত, ওভারহলিং ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার বিষয়েও আগ্রহ প্রকাশ করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খানের সঙ্গে সাক্ষাত করে এ আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত লিলি নিকোলাস।
সাক্ষাৎকালে কানাডার রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা বাংলাদেশের এভিয়েশন শিল্প বিশেষ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই। কানাডা জি টু জি ভিত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠান কানাডিয়ান কমার্শিয়াল করপোরেশনের মাধ্যমে বিমানের বিভিন্ন উড়োজাহাজের ইঞ্জিন মেরামত, ওভারহলিং ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার বিষয়ে আগ্রহী।
তিনি অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে ব্যবহারের জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে আরও ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ বিক্রির বিষয়েও কানাডার আগ্রহের কথা জানান। প্রত্যুত্তরে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, এরইমধ্যে বিমানের বহরে ডি হ্যাভিল্যান্ডের তৈরি তিনটি নতুন ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে। নতুন করে উড়োজাহাজ বিক্রির বিষয়ে কানাডার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পেলে বিমানের প্রয়োজন এবং দেশের মানুষের মঙ্গল বিবেচনায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুনভাবে গড়ে তুলছেন। তার আগ্রহে ইতোমধ্যেই বিমানের বহরে নতুন ও অত্যাধুনিক ১৫টি উড়োজাহাজ যুক্ত হয়েছে। আমরা বিমানের বহর সম্প্রসারণের পাশাপাশি নতুন নতুন আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক রুট চালু করার বিষয়ে কাজ করছি। ফারুক খান বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে দেশেই বিমানের নিজস্ব প্রকৌশলী ও টেকনিশিয়ানদের মাধ্যমে উড়োজাহাজের সি-চেক পর্যন্ত সকল টেকনিক্যাল কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। বিমানের বিভিন্ন উড়োজাহাজের ইঞ্জিন মেরামত ও ওভারহুইলিং এর বিষয়ে কানাডার প্রস্তাবের উপর আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে আলোচনা সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় মন্ত্রী কানাডার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ করার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন।
প্রসঙ্গত, কানাডার এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ডি হ্যাভিল্যান্ড’ ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ তৈরি করে। অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক রুটে চলাচল উপযোগী এই উড়োজাহাজ খুব ছোট রানওয়ে থেকে উড্ডয়নে সক্ষম। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে থাকা ২১ উড়োজাহাজের মধ্যে পাঁচটি ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজ, অপরগুলো মার্কিন প্রতিষ্ঠান বোয়িংয়ের। ৭৮ আসনের ড্যাশ-৮ দিয়ে বিমান অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালিয়ে আসছে।
বোয়িং এবং ড্যাশ-৮ দিয়ে বিমানের ফ্লাইট পরিচালিত হলেও সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় এই সংস্থা ফ্রান্সের এয়ারবাস কোম্পানির উড়োজাহাজ কেনার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বোয়িংও ফের বিমানের কাছে উড়োজাহাজ বিক্রির জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বৈঠক করে তাদের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। এরমধ্যেই কানাডা উড়োজাহাজ বিক্রির আগ্রহের কথা জানালো।
মন্তব্য করুন