কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২০ পিএম
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১:২১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

‘ষড়যন্ত্র-মিথ্যাচারে জামায়াত-শিবিরকে আর শেষ করা যাবে না’

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স হলে অনুষ্ঠানে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। ছবি : সংগৃহীত
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স হলে অনুষ্ঠানে মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। ছবি : সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘কোনো ষড়যন্ত্র-মিথ্যাচার করে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে আর শেষ করা যাবে না। আমি বাস্তবতা থেকে দেখেছি, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যারাই লাগতে এসেছে, ইতিহাসের চরম আস্তাকুঁড়ে তারাই নিক্ষিপ্ত হয়েছে। অনেককে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের সঙ্গে বিরোধিতা করতে গিয়ে চরম পরিণতির শিকার হতে দেখেছি।’

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের চকবাজার-বংশাল জোনের উদ্যোগে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স হলে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কোনো ষড়যন্ত্র-মিথ্যাচার করে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরকে আর শেষ করা যাবে না জানিয়ে রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলুম ও নির্যাতন মোকাবিলা করে সঠিক ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে সব সময় আমরা মহান আল্লাহর সাহায্য পেয়েছি। জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা সব ধরনের ষড়যন্ত্র চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই সামনে এগিয়ে যাবে।

জামায়াত সুশৃঙ্খল ও সুগঠিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের নেতারা এ কথা একবাক্যে স্বীকার করেন যে নিজামী সাহেবের মতো পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে আর কেউ ছিলেন না। তারপরও তাকে ফাঁসি দিয়ে শহীদ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য ছিল জামায়াতের নেতৃত্ব শেষ করার মাধ্যমে পুরো সংগঠনকে শেষ করে দেওয়া যাবে। কিন্তু না তা হয়নি, বরং জামায়াতে ইসলামী বর্তমান বাংলাদেশে সবচেয়ে সুশৃঙ্খল ও সুগঠিত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে আজ দাঁড়িয়ে গেছে।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি বলেন, বাংলাদেশে কিছুদিন আগেও যারা জুলুম চালিয়েছে, তারা আজ অন্ধকারে পালিয়ে গেছে। তাদের কেউ পালাতে বাধ্য করেনি, তবু ফ্যাসিবাদের সেসব দোসর ক্ষমতাধর দাবি করা ব্যক্তিরা পালিয়ে গেছে। সূর্যের আলোয় এখন তাদের খুঁজেও পায় না দেশের মানুষ। যারা বিদেশের মাটিতেও বাড়িঘর তৈরি করেছে তারাও আজ সেখানে থাকে না জনগণের ভয়ে-লজ্জায়। দুনিয়ায় এসব রাজনীতি করে তাহলে তাদের কী লাভ হয়েছে! যুগে যুগে যারাই জনগণের ওপর জুলুম করেছে, তাদের শেষ পরিণতি খুবই লজ্জাজনক হয়েছে, এটাই বাস্তব।

রফিকুল ইসলাম খান বলেন, যে ট্রাইব্যুনালে জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দেওয়া হয়েছে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস, আজ সেই ট্রাইব্যুনালেই আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের বিচারের সম্মুখীন হতে হয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ ও পাশের রাষ্ট্র এ দেশ থেকে ইসলাম নির্মূলের ষড়যন্ত্র পাকাপোক্ত করতেই জামায়াত নেতাদের ফাঁসির রায় দিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ১ নং থেকে ১১ নং পর্যন্ত শীর্ষ নেতাদের ওপরে জুলুম চালিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন সাজানো সাক্ষী এনে প্রহসনের রায় দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ দেখেছে জনগণ। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে, বিচারের রায় অন্য স্থান থেকে লিখে নিয়ে এসে তা কার্যকর করা হয়েছিল, যা ইতিহাসের চরম নিষ্ঠুরতা।

তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারাই এসব জুলুম-অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত ছিল, যারাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত, তারা বাংলাদেশে থাকুক কিংবা বিদেশে থাকুক তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে নিয়ে এসে ট্রাইব্যুনালে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এখনো যারা সরকারের ভেতরে-বাইরে ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে রয়েছে তাদেরও দ্রুত চিহ্নিত করতে হবে। গোঁজামিলের ভোটার তালিকা সবার আগে সংশোধন করতে হবে, ভুয়া সব ভোটার বাদ দিতে হবে। যারা আয়নাঘর তৈরি করে খুন এবং গুমের রাজনীতি চালু করে বাংলাদেশের মানুষের ওপর জুলুমতন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছিল তাদের ক্ষমা নেই। আজ বাংলাদেশে ইসলামপন্থিদের জাগরণ শুরু হয়েছে। আমাদের ঐক্য হবে আরও সুদৃঢ়। মনে রাখবেন ষড়যন্ত্রকারীদের পরিণতি কোনোদিনই ভালো হয় না, এটাই মহান আল্লাহর ওয়াদা।

সভাপতির বক্তব্যে চকবাজার-বংশাল জোন পরিচালক কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন বলেন, যুব সমাজের মাঝে আমাদের আহ্বান বেশি বেশি পৌঁছে দিতে হবে। বাংলাদেশে নতুন স্বাধীনতা পরবর্তী এ সময়ে আমরা যে আয়োজন করতে পারছি এর জন্য মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে হবে। এ উন্মুক্ত পরিবেশে কোরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে আগামীতে এ বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিবর্তনে আমাদের প্রত্যেককে ভূমিকা পালন করতে হবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রাক্তনের পাশে বসে বর্তমান প্রেমিকার নামে পূজা

৫ আগস্টের পর থেকে অপুর সঙ্গে যোগাযোগ নেই : উপদেষ্টা আসিফ

কক্সবাজার ইস্যুতে ‘গরম’ ছিল এনসিপির সাধারণ সভা 

সিলেটে পাথর লুটের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

‘মৃত ভোটারদের’ সঙ্গে চা পান করলেন রাহুল গান্ধী

টানা ৫ দিন বৃষ্টির আভাস, সন্ধ্যার মধ্যে যেসব জেলায় হতে পারে ঝড়

সাঈদীকে নিয়ে জামায়াত আমিরের বিবৃতি

ট্রেন আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এশিয়া কাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে প্রায় ২০০০ কোটি টাকার প্রশ্ন

গাজীপুরে এক বছরে বন্ধ ১০৬ কারখানা, অপরাধে জড়াচ্ছেন বেকার শ্রমিকরা

১০

সুপার কাপে নাটকীয় জয়ের পরও হতাশ পিএসজি কোচ

১১

ভারত যেন মুখোমুখি না হয় পাকিস্তানের—সাবেক পাক ক্রিকেটারের প্রার্থনা

১২

প্রধান বিচারপতির বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত

১৩

রাশিয়া / উদ্যান রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছেন স্থানীয়রা

১৪

হলিউডে অভিনয় করবেন জাহিদ হাসান?

১৫

সেপটিক ট্যাংকের শাটার খুলতে গিয়ে ২ শ্রমিকের মৃত্যু

১৬

দুদকের অভিযানের পরে নড়েচড়ে বসেছে সিলেটের প্রশাসন

১৭

‘অপুকে নির্যাতন করে উপদেষ্টার নাম বলানো হয়েছে’

১৮

হাসপাতালে হিরো আলম

১৯

‘আসছে পানি ভাসছে মানুষ’, তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে

২০
X