রাজধানীর গুলিস্তানে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের শান্তি সমাবেশে নৃশংসভাবে খুন হওয়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করিমের বিচারের দাবিতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য। ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল তিনটায় শাহবাগ চত্বরে ছাত্র সমাবেশ করবে সংগঠনটি।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) বাদ জুমা রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে হাফেজ রেজাউলের হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।
সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যর প্রধান সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি পরিষদের সদস্য মুহাম্মাদ কামাল উদ্দীনে সঞ্চালনায় সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের মুখপাত্র ও ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি শরিফুল ইসলাম রিয়াদ এ ঘোষণা দেন।
সমাবেশে তিনি বলেন, কথিত শান্তি সমাবেশের নামে নিরপরাধ নিরীহ মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউলকে রাজপথে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে। এই খুনের সঙ্গে ছাত্রলীগ যুবলীগ জড়িত তা এখন জাতির কাছে স্পষ্ট। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেশের ছাত্রসমাজ প্রত্যাশিত কোনো পদক্ষেপ দেখেনি। যা ছাত্রসমাজের মাঝে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে।
শরিফুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে ন্যায়বিচারের অধিকার রাখে। এ হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক বিবেচনায় না দেখে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে খুনিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে এবং হাফেজ রেজাউলের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী ছাত্রসমাজ গণআন্দোলন গড়ে তুলবে।
বক্তারা বলেন, ক্যাম্পাসে রাজনীতির সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর দর্জি দোকানদার বিশ্বজিৎ দাসকে বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। মাদ্রাসা শিক্ষার্থী রেজাউলকে হত্যা নতুন নয়। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর আলোচিত বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগের রাজনীতিকে সন্ত্রাসী রাজনীতি হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সারা দেশে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় সারা দেশের ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে ছাত্রলীগের নৈরাজ্য রুখে দিতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।
বিক্ষোভ মিছিল উপস্থিত ছিলেন ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিজাম উদ্দিন আল আদনান, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজের মহাসচিব বি এম আমির জিহাদী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ খালেদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মোল্লা মুহাম্মাদ খালিদ সাইফুল্লাহ, ভাসানী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি আহমেদ শাকিল, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাসুদ রানা জুয়েল, কওমি ছাত্র ফোরামের সদস্য সচিব জামিল সিদ্দিকীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই ঢাকার গুলিস্তানে যুবলীগ-ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের শান্তি সমাবেশে নৃশংসভাবে খুন করা হয় মাদ্রাসা শিক্ষার্থী হাফেজ রেজাউল করিমকে।
মন্তব্য করুন