বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আহবায়ক আমিনুল হক বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কিছু উপদেষ্টা দুর্নীতি করে অবৈধভাবে উপার্জন করছেন। দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের জনগণের টাকা তারা পাচার করছেন, নিজেদের পরিবারকে স্বাবলম্বী করছেন। তাদের দুর্নীতি ইতিমধ্যেই এ দেশের জনগণের কাছে প্রকাশ পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ এই ধরনের দুর্নীতিবাজ উপদেষ্টাদের রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায় না। আমরা দ্রুত সময়ের ভিতরে এই দুর্নীতিবাজ উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চাই।
শনিবার (২৪ মে) দুপুরে রাজধানীর পল্লবীর ২ নং কমিউনিটি সেন্টারে আগামী ২৮ মে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় তারুণ্যের সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে মহানগর উত্তর বিএনপির এক যৌথসভায় সভাপতির বক্তব্যে আমিনুল হক এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন ব্যক্তিত্ব। তিনি যখন ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার কথা চিন্তা করছেন- এই সিদ্ধান্ত তার ব্যক্তিগত। কিন্তু পরবর্তীতে কে বা কারা ক্ষমতার দায়িত্বভার গ্রহণ করবে, সেইটা সিদ্ধান্ত নিবে এ দেশের সাধারণ মানুষ, এ দেশের জনগণ।
জনগণের উপরে বিএনপির পরিপূর্ণ আস্থা রয়েছে জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, আমরা জনগণকে সাথে নিয়ে আমাদের সকল কার্যক্রম করতে চাই। এ দেশের সাধারণ মানুষকে নিয়েই আমাদের সকল কার্যক্রম। সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়েই আমাদের পথচলা। আগামীর স্বপ্নের বাংলাদেশ ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে চলেছি।
অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বৈরাচারমুক্ত হওয়ার পরে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে যখনই আমরা একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলছি- তারা সংস্কার ও স্বৈরাচারের বিচারের কথা বলে বিভিন্ন অজুহাত দাড় করানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কোনো অজুহাত কাজে লাগাতে পারেনি। কারণ, তাদের শক্তি তারা নিজেরা। যদি তারা তাদের নিজেদের চাহিদা পূরণের জন্য অহেতুক নির্বাচন পিছানোর অপচেষ্টা করে, তাহলে বাংলাদেশের জনগণ কখনই তা মেনে নিবে না।
অন্তর্বর্তী সরকার দীর্ঘ ৯ মাসেও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে স্থিতিশীলতা ফেরাতে পারেনি মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের প্রশ্রয় দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার নিজেরাই বিতর্কের মধ্যে পড়ে গেছে। আমরা বাংলাদেশকে নিয়ে, বাংলাদেশের মানুষকে নিয়ে সেই ধরনের বিতর্ক দেখতে চাই না। আমরা সকল বিতর্কের অবসান ঘটিয়ে এই অন্তর্বর্তী সরকারকে আহবান জানাবো- আপনারা দ্রুত সময়ের ভিতরে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। জনগণই ঠিক করবে কীভাবে বাংলাদেশ চলবে এবং রাষ্ট্র সংস্কার ও স্বৈরাচারের দোসরদের বিচার করতে হবে।
বিএনপি তরুণদের চিন্তা-ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চায় জানিয়ে আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটির উপরে তরুণ ভোটার রয়েছে। গত ১৫ বছর স্বৈরাচার জনবিচ্ছিন্ন সরকারের কারণে তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি। ৫ আগস্টের পরে যারা নতুন করে আবার ভোটার হয়েছেন, সেই নতুনদের যে চিন্তা-ভাবনা, বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার যে স্বপ্ন তারা দেখছেন, তাদের সেই স্বপ্নের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আমরাও সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে চাই।
মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব মোস্তফা জামানের সঞ্চালনায় যৌথসভায় উত্তরের যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, এবিএমএ রাজ্জাক, এম কফিল উদ্দিন আহমেদসহ মহানগর উত্তর বিএনপির ২৬টি থানা ও ৭১টি ওয়ার্ড বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন