শেখ হাসিনা পালানোর আগে তার আত্মীয়-স্বজনদের খুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
রোববার (৬ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ গণজাগরণ দলের উদ্যোগে এক প্রতিবাদী সমাবেশে আলাল এ কথা বলেন। ২০১১ সালের ৬ জুলাই তৎকালীন সংসদের বিরোধীদলীয় চিফ হুইফ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর নৃশংস ঘৃণিত হামলার সঙ্গে জড়িত হারুন, বিপ্লবদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে এই প্রতিবাদী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আলাল বলেন, শেখ হাসিনা পালানোর আগে তার আত্মীয়-স্বজনদের খুদে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। কোনো গণমাধ্যমে এ তথ্য আসেনি। অথচ এ তথ্যটা আরও বেশি বেশি প্রচার হওয়া দরকার ছিল। শেখ হাসিনা গত বছরের ২ আগস্ট তার আত্মীয়-স্বজনদের খুদে বার্তা পাঠিয়েছিল যে, তোমরা যে যেভাবে পার দেশ ছেড়ে চলে যাও। দেশ থেকে বিদেশে পালাও। যে কারণে তার কোনো আত্মীয়-স্বজন গ্রেপ্তার হয়নি। সবাই নিরাপদে দেশ থেকে পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, দেশে নতুন করে রাজনৈতিক জোট পাকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই যারা আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন এবং যে যুবকরা নতুন দল গঠন করেছে, তাদের সংশোধন হওয়ার জন্য বলি। এটা শুধু ছাত্রদের আন্দোলন ছিল না। এ আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রীরাও জড়িত ছিলেন, তাদের মায়েরাও জড়িত ছিলেন। এটা হবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন। শুধু ছাত্রদের আন্দোলন না এবং এর পিছনে প্রেরণা ও শক্তি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বে যে জোট সেই জোট। এই জোট ছিল এর পেছনের শক্তিদাতা।
যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, সবচেয়ে বেশি শহীদের সংখ্যা বিএনপিতে, সবচেয়ে বেশি আহতের সংখ্যা বিএনপিতে, সবচেয়ে বেশি গুমের সংখ্যা বিএনপিতে, কিন্তু আমরা এই কৃতিত্বের দাবি করি না। আমরা মনে করি, বিএনপির এটা করা উচিত ছিল, করেছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বছরের পর বছর জেল খেটেছেন একটি মিথ্যা মামলায়, নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারপরও শেখ হাসিনা যখন পালিয়ে যান, বেগম খালেদা জিয়া তখন বলেছিলেন- আজ শান্তির দিন। কেউ প্রতিহিংসায় মেতে উঠবেন না। কেউ অন্যায় করবেন না। দিস ইজ খালেদা জিয়া। সেই বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক জয়নুল আবদিন ফারুক। দেখুন জিয়ার সৈনিক আমরা, তাই আমাদের সে লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
আলাল বলেন, দেশে নতুন আরেকটা রঙ্গিলা বাক্স নিয়ে হাজির হয়েছে। এই রঙ্গিলা বাক্সটা হচ্ছে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন। পিআর পদ্ধতি যেসব দেশে আছে, সেসব দেশগুলোর কোনো একটি দেশেও স্থিতিশীল সরকার নেই। স্বাভাবিক গতির সরকার নেই। বেলজিয়াম ও ইসরাইলেও আছে। ইসরাইলের নাম বললে আর কোনো দেশের কথা বলা লাগে না। এই পিআর পদ্ধতি নির্বাচনের আরও অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে। তবে একটা জিনিস সবাইকে পরিষ্কারভাবে বুঝতে হবে, তা হলো একটি পুরাতন বিল্ডিং ভেঙে ফেলতে হলে তার আগে ওই জায়গায় কী করবেন সেটার পরিকল্পনা নিতে হবে। এখন বিল্ডিং ভেঙে ফেললেন, কোনো পরিকল্পনা নেই, তাহলে ওই জায়গাটা ফাঁকা হয়ে যাবে। আর ফাঁকা জায়গায় ঝড়-বৃষ্টি-টর্নেডো হয়। সেই টর্নেডো ঝড়ের প্রত্যাশা নিয়ে পিআরের পক্ষে কারা কারা আছেন, সেটা নিয়ে আমাদের গভীরভাবে চিন্তা করতে হবে।
সংগঠনটির সভাপতি হাবিব আহমেদ আশিকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আর বক্তব্য দেন- নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক এমপি হারুনুর রশিদ, আয়োজক সংগঠনের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনির, ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।
মন্তব্য করুন