কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৪ জুলাই ২০২৫, ০৪:৫০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

দেশের একজন বড় শত্রু গ্রেপ্তার হলেন : মির্জা ফখরুল

দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত
দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি : সংগৃহীত

সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের গ্রেপ্তারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, দেশের একজন বড় শত্রু গ্রেপ্তার হলেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

তিনি বলেন, বিলম্বে হলেও এ বি এম খায়রুল হকের বিরুদ্ধে সরকার (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা আশা করি, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ যথাযথভাবে তদন্ত হবে এবং সঠিকভাবে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। দেশের একজন বড় শত্রু অবশেষে গ্রেপ্তার হলো—এটা জাতির জন্য স্বস্তির বিষয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই, কারণ বাংলাদেশের একজন বড় শত্রু—যিনি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে দেশের বিপুল ক্ষতি করেছেন। অবশেষে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তিনি এমন একটি পদে ছিলেন, যেখান থেকে দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। কিন্তু সে জায়গায় তিনি জনগণ ও রাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যে সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন এবং পরে যে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়, তার মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ ছিল। সেই রায় দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে গেছে বলে আমরা মনে করি। তার এই বেআইনি ও রাষ্ট্রবিরোধী ভূমিকার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

রাজনৈতিক সংকট তৈরিতে নিঃসন্দেহে খায়রুল হক দায়ী ছিলেন, তার কী ধরনের শাস্তি হওয়া উচিত—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই সংকটের জন্য তিনি শতভাগ দায়ী। তবে শাস্তির বিষয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলতে চাই না। আইন অনুযায়ী যেসব বিধান আছে, তা অনুসরণ করেই তাকে প্রসিকিউট করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তবে আমি মনে করি, তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ ওই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কাজ করার সাহস না পায়। শুধু তিনি নন, যারা এ ধরনের অপকর্মে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধেও সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আমরা আশা করি।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের রায়ের পরই দেশের সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়। এর পর থেকেই দেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংকটের সূচনা ঘটে, যা জাতিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমরা মনে করি, বিচার বিভাগ এমন একটি সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান, যেখানে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস থাকে। কিন্তু তিনি সে আস্থার জায়গাটি ধ্বংস করেছেন—শুধু তার রাজনৈতিক চিন্তাভাবনার কারণে। এতে করে দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, আমরা পত্রপত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, কার্জন হলের উল্টো পাশে, হাইকোর্টের পাশেই অবস্থিত শিশু একাডেমির ভবনটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে আলোচনা চলছে বা এরকম কোনো প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি। এই বিরোধিতার কারণ হলো—শিশু একাডেমি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, যার মাধ্যমে শিশুদের মানসিক, সৃজনশীল ও নৈতিক বিকাশের জন্য নানা ধরনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই একাডেমি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং তিনিই এটি প্রথম চালু করেন। বর্তমানে এটি সারা দেশে শাখা বিস্তার করেছে। তাই আমরা মনে করি, শিশু একাডেমিকে ওই স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জাতি গঠনের পথে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, শিশু একাডেমির ভবনটি যেন স্থানান্তর বা অপসারণ না করা হয়।

এই সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উত্তরায় তিন শিশুর কবর জিয়ারত

উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিক্ষার্থীর পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপি মহাসচিব। সকাল ১১টায় তিনি উত্তরার দিয়াবাড়ির তারারটেকের কাছে একটি পারিবারিক কবরস্থানে যান। সেখানে এক পরিবারের তিন শিক্ষার্থী শায়িত আছে। বিএনপি মাইলস্টোন স্কুলের তিন শিক্ষার্থী আরিয়ান, হুমায়ূরা ও বাপ্পির পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর সেখানে আরও দুই শহীদ জুনায়েদ ও শারিয়ার করবও জিয়ারত করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের সান্ত্বনা দেন।

এ সময় মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর, কফিল উদ্দিন আহমেদ, আফাজ উদ্দিন ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ না করে অতিরিক্ত বিল প্রদান, দুদকের অভিযান

ডাকসু নির্বাচনে যাকে ভোট দিতে বললেন সারজিস

মোহাম্মদপুরে ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত ১

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি প্রয়োগ করতে হবে

যেই জিতুক তাকে অন্যরা বরণ করে নেবেন : আসিফ নজরুল

ক্যালকুলেশান করে আমাকে ভোটবঞ্চিত করলে গাদ্দারি করবেন : মেঘমল্লার

আস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারালেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী বাইরু

ভারত-নেপাল সীমান্তে উত্তেজনা, সতর্কতা জারি

ডাকসুতে ভিপি পদে দাঁড়ানোর কারণ জানালেন উমামা ফাতেমা

একটি কক্ষ, একটি ইতিহাস

১০

ডাকসু নির্বাচন / আ.লীগের বিভিন্ন গ্রুপে ভিপি পদে শামিমকে জেতানোর নির্দেশনা!

১১

শেষ সময়ে ডাকসু নির্বাচনের ৬ প্রার্থীকে ছাত্রদল থেকে আজীবন বহিষ্কার

১২

জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীতে এনসিপির বিক্ষোভ 

১৩

ডাকসু নির্বাচন / নকল আইডি কার্ড তৈরি করে ঢাবিতে প্রবেশের চেষ্টা, আটক ১

১৪

স্বাধীনতা সংগ্রামের তাৎপর্য বিবেচনা করেই ডাকসুতে ভোট দিন : ছাত্রদল সেক্রেটারি

১৫

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন হবে : আমীর খসরু

১৬

ডাকসু নির্বাচন / ব্যালটে ‘ক্রস চিহ্ন’ এঁকে ভোট, ভাঁজ করতে মানা

১৭

বিশ্বকাপে মেসির খেলা নিয়ে যা বললেন স্কালোনি

১৮

যে কেন্দ্রে ভোট দেবেন শিবিরের সাদেক কায়েম ও ফরহাদ

১৯

কবে থেকে বাড়তে পারে বৃষ্টি, জানাল আবহাওয়া অফিস

২০
X