গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলা চেষ্টা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক স্ট্যাটাসে এ প্রতিক্রিয়া জানান।
নাহিদ ইসলাম লিখেন, গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম কেন্দ্রীয় চরিত্র ও অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর লন্ডনে হামলার চেষ্টা হয়েছে। এর আগে আমেরিকায় হামলা ও অপদস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। বারবার মাহফুজ আলমের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের হামলা, কারণ মাহফুজ আলমই টার্গেট। পরবর্তী ধাপে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হবো। আমরা জানি আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। গোপালগঞ্জে ফ্যাসিস্টদের নৃশংসতা আমরা দেখে আসছি।
তিনি উল্লেখ করেন, মাহফুজ আলমের ওপর হামলার মৌন সম্মতি যারা তৈরি করছে তারাও ভুগবে। ফ্যাসিবাদ বিভাজনের রাজনীতি করে। মাহফুজ আলম গণঅভ্যুত্থানের পরে অন্তর্ভুক্তি এবং দায় ও দরদের রাজনীতির কথা বলছে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই পথে হাঁটে নাই। আমরা দেখতে পাইছি ফ্যাসিবাদ বিরোধিতার নাম করে প্রতিক্রিয়াশীল ও প্রতিশোধের রাজনীতি শুরু করছে বিভিন্ন গ্রুপ যা অবশ্যম্ভাবীভাবে ফ্যাসিবাদকে ফিরায়ে আনবে।
নাহিদ ইসলাম লিখেন, সময় প্রমাণ করবে মাহফুজ আলমই সঠিক ছিল যদি ততদিন উনি বেঁচে থাকার সুযোগ পান।
তিনি উল্লেখ করেন, মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় কোনোবারই অন্তর্বর্তী সরকার কোনো স্ট্রং পদক্ষেপ নেয় নাই। কোনো শক্তবার্তা দেয় নাই। কোনো উপদেষ্টা বা প্রেস সচিব একটা মন্তব্যও কখনো করে নাই। সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদের ভিতরেও মাহফুজ আলমকে অপদস্ত ও হত্যার মৌন সম্মতি তৈরি করা হয়েছে। এই সরকার ও উপদেষ্টাগণ মাহফুজদের যথেচ্ছা ব্যবহার করে এখন মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আমরা এগুলা মনে রাখছি। রাজনৈতিকভাবে এর জবাব দেওয়া হবে।
এর আগে লন্ডনে সোয়াস ইউনিভার্সিটি আয়োজিত একটি সেমিনার থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টা করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। লন্ডনের কেন্দ্রস্থলের ব্লুমসবারি এলাকায় সোয়াস ইউনিভার্সিটি (দ্য স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ) ক্যাম্পাসে ওই সেমিনার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ হাইকমিশন। সে অনুষ্ঠানে মাহফুজ আলম অংশ নিতে যাচ্ছিলেন।
গতকাল শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) লন্ডনের স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টায় সোয়াস বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পেছনের রাস্তা দিয়ে হাইকমিশনের গাড়ি বের হলে গাড়ির ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন দলটির নেতাকর্মীরা। এ সময় হাইকমিশনের কালো রঙের বিএমডব্লিউ গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ার চেষ্টা করেন তাদের কয়েকজন। কিন্তু পুলিশের হস্তক্ষেপে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলেও তারা গাড়ির ওপর ডিম নিক্ষেপ করেন। তবে ওই গাড়ির ভেতরে মাহফুজ আলম ছিলেন না বলে দাবি করেছে লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশন।
হাইকমিশনের প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন বাংলাদেশের একটি শীর্ষ দৈনিককে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কর্মীরা এই গাড়িতে মাহফুজ আলম আছেন মনে করে ডিম ছুড়লেও তিনি অন্য রাস্তায় অন্য গাড়িতে করে সোয়াস ইউনিভার্সিটি ত্যাগ করেছেন।’
মন্তব্য করুন