কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৩৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

নির্বাচন বানচালকারীদের রাজপথে প্রতিহত করা হবে : মেজর হাফিজ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

পাহাড়ে আবারও পুরনো খেলা শুরু হয়েছে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন বানচালকারীদের বিএনপি রাজপথেই প্রতিরোধ করবে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যারা বলছে যে, নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। আমরা তাদের বলতে চাই, বিএনপি কোনো দুর্বল দল নয়। কারা নির্বাচন হতে দেবে না ইনশাআল্লাহ আমরা রাজপথে দেখতে চাই। ১৭ বছরের আত্মত্যাগ তো ব্যর্থ হতে পারে না। ইনশাল্লাহ ফেব্রুয়ারি মাসেই নির্বাচন হবে।

প্রশাসনের বসে ফ্যাসিস্টদের দোসরদের অপসারণ দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে এখনো নির্বাচনী ম্যাপের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছে না তার একটি কারণ বর্তমান প্রশাসন। এখানে স্বৈরাচারের দোসররা এখনো বসে আছে, এদের সরানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং এরা থাকলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি জানিয়েছি, নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থেই বর্তমান প্রশাসন ব্যবস্থাকেও নিরপেক্ষ করতে হবে। আমরা স্বৈরাচারের দোসরদের মাঠে রেখে নির্বাচনে যেতে পারি না।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়তাবাদী জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের উদ্যোগে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিকল্প নাই’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে বিএনপি ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হতে পারে না, এ দেশের জনগণ এটা সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই। যারা পিআর নিয়ে আন্দোলন করছেন তাদের বলব, আপনারা জনগণের কাছে যান। আপনাদের ম্যানিফেস্টোতে বলেন, ইশতেহারে বলেন, যে আমরা সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন চাই এই দেশে… জনগণ যদি আপনাদের সংখ্যাগিষ্ঠতা দেয় তাহলে আপনারা এই ব্যবস্থা চালু করেন। আমরা মাথা পেতে নেব। কিন্তু এইভাবে জনগণের উপরে দুই-তিনটি রাজনৈতিক দল, ইউরোপ আমেরিকা থেকে আসা বুদ্ধিজীবীদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে এই ধরনের সিস্টেম করতে যাওয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হবে। আমরা দেশের সর্ববৃহৎ দল রাজনৈতিক দল বিএনপি, আমরা কখনোই এটিকে সহ্য করব না, এইভাবে জনগণের উপর অত্যাচার করে নিজেদের স্বার্থে, নিজস্ব দলীয় স্বার্থে অদ্ভুত নির্বাচনী ব্যবস্থা যার সাথে আমাদের দেশের জনগণ পরিচিত নয় এই ব্যবস্থা আমরা চালু হতে দিতে পারি না।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সাহেবকে আমরা সন্মান করি, তিনি দেশের গৌরব। কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি সফলতার মুখ দেখাতে পারেননি। সফলতা পান না পান ব্যয় সংকোচন তো করতে হবে। ১০৪ জনকে নিয়ে কেন জাতিসংঘে গেলেন? ১০ মিনিটের একটা ভাষণ দেবেন… আমি জাতিসংঘে দুই বার গিয়েছি এই ধরনের মিটিংয়ে… আমিও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছি। এই ধরনের অধিবেশনে ১০৪ জনের বিরাট লটবহর নিয়ে গিয়েছে… এটা বাংলাদেশের জনগণের ট্যাক্সপেয়ারের অর্থের অপচয়। প্রধান উপদেষ্টা প্রেস টিমের পাঁচজন গিয়েছেন, অন্যান্য সাংবাদিকরা তো গিয়েছেন… এটা তো আপনার-আমাদের অর্থের অপচয়। গতবছর তো তিনি ৫৪ জন নিয়ে গিয়েছিলেন এটা গ্রহণযোগ্য কিন্তু ১০৪ জনকে নিয়ে এইভাবে পিকনিক করতে যাওয়া বাংলাদেশের মতো দুর্বল অর্থনীতির দেশের পক্ষে মানানসই নয়। দেশে আজকে গণতন্ত্র নেই বলে এরকম হচ্ছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এর চাইতেও বেশি প্রতিনিধিদল নিয়ে জাতিসংঘে বেড়াতে গিয়েছেন, কখনো দিনের পর দিন বাংলাদেশ বিমানের এয়ারক্রাফট… কখনো ফিনল্যান্ডে, কখনো ইংল্যান্ডে, কখনো যুক্তরাষ্ট্রে বসে আছে। মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মদ, সিঙ্গাপুরের লিকওয়ান ইউ তারা এত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন তারাও নরমান এয়ারলাইন্সে ট্রাভেল করেন। কিন্তু এইভাবে দরিদ্র একটা দেশে মানুষ বিমান নিয়ে ওখানে বসিয়ে রাখে এবং ঘণ্টার পর ঘণ্টা অনেক টাকা ফি দিতে হয় বিভিন্ন এয়ারপোর্টে ...। বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত উদারচেতা- সরকার কি করে এটা জানতেও পারে না।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর কিছুটা প্রেস ফ্রিডম এখানে এসেছে, আমরা জানতে পারি যে, সরকার ও সরকার প্রধানরা কি করে? আওয়ামী লীগের লুণ্ঠন তো সীমাহীন…এই ধরনের কাহিনি মাঝে মাঝে বের হয়ে আসছে। একজন প্রতিমন্ত্রী তার ৩৬০টি বাড়ি শুধু লন্ডনেই, ২০০ বাড়ি দুবাইতে, আমেরিকাতে।

হাফিজ বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রামে আবার শুরু হয়েছে পুরনো খেলা। সেখানে ভারতীয় পতাকা উঠতো.. বহু বছর আগে থেকেই। শুধু শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান… তিনি সেখানে বাঙালিদের পাহাড়ি এলাকায় পুনর্বাসিত করার পরে সেখানে জনসংখ্যার মধ্যে একটা ব্যালেন্স এসেছে যার জন্য এখন আর তারা ভারতের পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করতে পারছে না। এইজন্য শহীদ জিয়াউর রহমান ইতিহাসে অমর হয়ে থাকবেন… তিনি বাংলাদেশের অখণ্ডতাকে রক্ষা করেছেন… স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে, সবসময় পতাকাকে উড্ডীন রেখেছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্কুল-কলেজে নতুন নিয়মে হবে কর্মচারী নিয়োগ

চাঁদাবাজির মামলায় সমন্বয়ক রাব্বিসহ ৫ জন কারাগারে

৩ বস্তা মরা মুরগি নিয়ে যাচ্ছিলেন রেস্তোরাঁয়, অতঃপর...

বরিশালে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার দুই

নির্বাচিত সরকার না এলে দেশে অর্থনৈতিক বিপর্যয় আসবে : ব্যারিস্টার অসীম 

যমুনাপারের হতদরিদ্র মানুষের চাল যাচ্ছে কার পেটে?

প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে জামায়াত-শিবিরদের বসানো হয়েছে, দাবি রিজভীর

নতুন চার ধরনের ভিসা চালু করল আমিরাত, পরিবর্তন পুরোনো নিয়মেও

সাকিবকে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপদেষ্টা আসিফের

ডেঙ্গুতে ঝরল আরও ৩ প্রাণ, হাসপাতালে ৭৩৫

১০

দেশে নির্বাচনের সময়ক্ষেপণের ষড়যন্ত্র চলছে : এম এ মালেক

১১

১৩ মাসে ১৪ খুন, উদ্বিগ্ন জনসাধারণ

১২

৪০ কোটি টাকা পাচার, ১৪ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা 

১৩

ষড়যন্ত্রকারীরা গণতন্ত্রকে রুখতে পারবে না : গয়েশ্বর

১৪

লোভনীয় অফারে হাতিয়ে নিত মোটা অঙ্কের টাকা, গ্রেপ্তার ৫

১৫

গ্রেপ্তার হতে যাচ্ছেন থালাপতি বিজয়?

১৬

জাপার রওশনপন্থি মহাসচিব মামুনুর রশীদের ৬ দিনের রিমান্ড

১৭

দুর্গাপূজায় অসহায়দের পাশে সনাতনী অধিকার আন্দোলন

১৮

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কোরআনে হাফেজের মৃত্যু

১৯

‘বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে সমন্বিত স্বাস্থ্যখাত তৈরি করা হবে’ 

২০
X