তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের মামলায় মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’র সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানের কারাদণ্ড এবং কারাগারে প্রেরণের ঘটনাকে বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় আরেকটি নগ্ন হস্তক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, এই রায়ে আরেকবার প্রমাণিত হলো সরকার দেশের বিচারব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করেছে। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন মান্না।
আইসিটি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অধিকারের পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানকেও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।
বিবৃতিতে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানবাধিকার বলে এই দেশে কিছু নেই। সরকার দেশের জনগণের মানবাধিকার হরণ করার পাশাপাশি মানবাধিকার কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। তারা মামলা, হামলা, জেল, জরিমানা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মী, সাংবাদিক, অধিকার কর্মীদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকে অধিকারের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে ফরমায়েশি রায় দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হলো। এটা বাংলাদেশে বিচারিক হয়রানির আরেকটি উদাহরণ।
তিনি বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, মানবাধিকার কর্মী, সাংবাদিক এমনকি ড. ইউনূসের মতো শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর বিরুদ্ধে বিচারিক হয়রানি শুরু করেছে। তারা বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে নির্বাচনের আগে সব বিরোধী শক্তিকে কারাগারে পাঠানোর পাঁয়তারা করছে। এই অবৈধ সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের জনগণের নাগরিক এবং সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না। তিনি অবিলম্বে আদিলুর রহমান এবং নাসির উদ্দিন এলানের মুক্তি দাবি করেন।
সাইবার নিরাপত্তা বিল পাসের প্রতিবাদ
আলাদা বিবৃতিতে ‘পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশি এমনকি গ্রেপ্তারের বিধান রেখে’ জাতীয় সংসদে সাইবার নিরাপত্তা বিল পাসের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই বছর কারাভোগ করা ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কেবল নাম পরিবর্তন করে নিবর্তনমূলক আরেকটি আইন পাস করে সরকার দেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক মহলকে ধোঁকা দিতে চাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যে দুটি ধারা বাতিলের কথা বলেছিল, সেই দুটি ধারাও বাতিল করা হয়নি। উপরন্তু এই আইনের ৪২ ধারায় পুলিশকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো সাইবার নিরাপত্তা আইনও জনগণের স্বাধীন মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ফ্যাসিবাদী সরকারের চূড়ান্ত হস্তক্ষেপ।
মন্তব্য করুন