'অসুস্থ' বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বিএনপিকে শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের শর্ত দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। রোববার (০১ অক্টোবর) রাতে কিশোরগঞ্জের লতিফাবাদ চক্ষু হাসপাতাল মাঠে বিএনপির রোডমার্চের সমাপনী সমাবেশে এই কথা জানান তিনি।
আলাল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে শর্ত দেওয়া হয়েছিল- তিনি যদি চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে চান, তাহলে বিএনপিকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আসতে হবে। বিএনপি থেকে উত্তর দেওয়ার আগেই অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতাল থেকে খালেদা জিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন- তার জীবনে গণতন্ত্রের জন্য কোনো শর্ত নেই। ভোটের অধিকারের জন্য, এই দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য কোনো শর্ত নেই। কোনো শর্ত খালেদা জিয়ার নামের সঙ্গে যায় না এবং আমরাও তা মানি না।’
সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির ‘একদফা’ দাবিতে বেলা সাড়ে ১১টায় ময়মনসিংহের ত্রিশালের বগার বাজার থেকে রোডমার্চ শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টায় কিশোরগঞ্জ পৌঁছায়।
বিএনপি'র এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, শেখ হাসিনা বলেছিলেন ওয়ান-ইলেভেন সরকার তাদের আন্দোলনের ফসল। তাদের সবকিছুকে বৈধতা দিতে চেয়েছিলেন এবং দিয়েছেন। আর তার পুরস্কার হিসেবে ক্ষমতায় এসেছেন। এই শেখ হাসিনাই ১৯৯৪, '৯৫ ও '৯৬ সালে বারবার বলেছেন- চিরদিনের জন্য নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার চাই। আজ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গায়ে এত ফুটা হয়ে গেল? তারা ২৬৬ দিন হরতাল করেছে। তারমধ্যে ১৭৩ দিন হরতাল করেছে শুধু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, এদের সাথে কোনো খেলা হবে না। এদের খেলা শেষ হয়ে গেছে। লুডু খেলায় যেমন তিন ছক্কায় পোক্কা হয়, তেমনি এরা পোক্কা হয়ে গেছে। এই পোক্কার পার্টির সাথে আমরা খেলি না। আমরা রাজনীতি নিয়ে, গণতন্ত্র নিয়ে খেলি না। আমরা গণতন্ত্র উদ্ধারের লড়াইয়ে নেমেছি, বিজয় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে এবং জেলার সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা ওয়ারেছ আলী মামুন, আবদুল বারী ড্যানি, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মন্তব্য করুন