দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের দহাতে প্রতিষ্ঠিত হয় দলটি। একাধিকবার দেশ পরিচালনার দায়িত্বও পায় দলটি। বিএনপির প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে বর্তমান অবস্থা জেনে নিন এক নজরে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের হাতে ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় বিএনপি। ১৯৭৭ সালে ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। তিনি যখন সিদ্ধান্ত নেন রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার। ওই জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে এলে জিয়া বিএনপি গঠন করেন। জাগদলকে বিএনপির সঙ্গে একীভূত করা হয়। জিয়া এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন এবং এই দলের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এর প্রথম মহাসচিব ছিলেন। বিএনপির সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল নিয়োগ পদ্ধতি। প্রায় ৪৫ শতাংশ সদস্য শুধু রাজনীতিতে যে নতুন ছিলেন তাই নয়, তারা ছিলেন তরুণ। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে রমনা রেস্তোরাঁয় জিয়াউর রহমান সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের যাত্রা শুরু করেন। সংবাদ সম্মেলনে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি প্রথমে ১৮ জন সদস্যের নাম এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ওই ১৮ জনসহ ৭৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।
জিয়াউর রহমান (আহ্বায়ক), সদস্য ছিলেন—বিচারপতি আবদুস সাত্তার, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, মোহাম্মদউল্লাহ, শাহ আজিজুর রহমান, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল হালিম চৌধুরী, রসরাজ মণ্ডল, আবদুল মোনেম খান, জামাল উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, মির্জা গোলাম হাফিজ, ক্যাপ্টেন (অব.) নুরুল হক, সাইফুর রহমান, কে এম ওবায়দুর রহমান, মওদুদ আহমেদ, শামসুল হুদা চৌধুরী, এনায়েতুল্লাহ্ খান, এস এ বারী, ড. আমিনা রহমান, আবদুর রহমান, ডা. এম এ মতিন, আবদুল আলিম, ব্যারিস্টার আবুল হাসনাত, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, নুর মোহাম্মদ খান, আবদুল করিম, শামসুল বারী, মুজিবুর রহমান, ডা. ফরিদুল হুদা, শেখ আলী আশরাফ, আবদুর রহমান বিশ্বাস, ব্যারিস্টার আবদুল হক, ইমরান আলী সরকার, দেওয়ান সিরাজুল হক, এমদাদুর রহমান, অ্যাডভোকেট আফসার উদ্দিন, কবীর চৌধুরী, ড. এম আর খান, ক্যাপ্টেন (অব.) সুজাত আলী, তুষার কান্তি বারবি, সুনীল গুপ্ত, রেজাউল বারী ডিনা, আনিসুর রহমান, আবুল কাশেম, মনসুর আলী সরকার, আবদুল হামিদ চৌধুরী, মনসুর আলী, শামসুল হক, খন্দকার আবদুল হামিদ, জুলমত আলী খান, অ্যাডভোকেট নাজমুল হুদা, মাহবুব আহমেদ, আবু সাঈদ খান, মোহাম্মদ ইসমাইল, সিরাজুল হক মন্টু, শাহ বদরুল হক, আবদুর রউফ, মোরাদুজ্জামান, জহিরুদ্দিন খান, সুলতান আহমেদ চৌধুরী, শামসুল হুদা, সালেহ আহমেদ চৌধুরী, আফসার আহমেদ সিদ্দিকী, তরিকুল ইসলাম, আনোয়ারুল হক চৌধুরী, মাইনুদ্দিন আহমেদ, এম এ সাত্তার, হাজি জালাল, আহমদ আলী মণ্ডল, শাহেদ আলী, আবদুল ওয়াদুদ, শাহ আবদুল হালিম, জমির উদ্দিন সরকার, আতাউদ্দিন খান, আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী, আহমদ আলী।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ১৪২টি আসন লাভ করে। তারা জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে। ফলশ্রুতিতে বিএনপি সংরক্ষিত ৩০টি মহিলা আসনের ২৮টি নিজেরা রেখে বাকি দুটি জামায়াতকে দিয়ে দেয়। ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ চারদল প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয় পায়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনা সদস্যদের গুলিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর প্রায় তিন বছর পর্যন্ত বাংলাদেশ শাসিত হয় অনির্বাচিত সরকার দ্বারা। ওই সময় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান। তিনি রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থায় ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনে বিএনপি ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২০৭টিতে জয় পায়। ক্ষমতা নেওয়ার মাত্র দুই বছরের মাথায় জিয়াউর রহমান আততায়ীর হামলায় নিহত হলে তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি হন। পরে ১৯৮২ সালে সাত্তারকে সরিয়ে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রপতি হন।
জনতার বিক্ষোভের মুখে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পদত্যাগে বাধ্য হন। তিন দফা রূপরেখা অনুযায়ী প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি হয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিএনপি সর্বাধিক আসনে জয় পায়। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ১৯৯১ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত গণতন্ত্রকে অনেকটা হুমকির সম্মুখে ঢেলে একদলীয় নির্বাচন করে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। এই সরকারের মেয়াদ ছিল মাত্র ৪৫ দিন।
২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। ২১০টি আসন নিয়ে চারদলীয় ঐক্যজোট ক্ষমতায় যায়।
বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা রাখে। এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ৭ দলীয় জোট গঠন করে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে বিএনপি এরশাদ আমলে অনুষ্ঠিত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন বয়কট করে। এই আন্দোলনে বিএনপির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
নব্বই দশকে এরশাদের সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সাত দলের সমন্বয়ে সাত দলীয় জোট গঠন করা হয়। জোটভুক্ত দলগুলো হলো—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), প্রগ্রেসিভ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (পিএনপি), বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, ডেমোক্র্যাটিক লীগ, ইউনাইটেড পিপলস পার্টি (ইউপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), চারদলীয় জোট গঠন। ১৯৯৯ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি এবং ইসলামী ঐক্য জোট মিলিত হয়ে চারদলীয় ঐক্য জোট গঠন করে। কিছু দিন পরেই জাতীয় পার্টির একটি অংশ এরশাদের নেতৃত্বে দল থেকে বের হয়ে যায়। নাজিউর রহমান মঞ্জুরের সমর্থক অংশটি জোটে থেকে যায়। জোটভুক্ত দলগুলো হলো—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্য জোট, বিশ দলীয় জোট। ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল বিএনপি আরও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একীভূত হয়ে ১৮ দলীয় জোট গঠন করে। এই জোটে বিএনপির শরিক হিসেবে—বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), ইসলামী ঐক্যজোটসহ নতুন যোগ দেয় লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি), বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ইসলামিক পার্টি, ন্যাপ ভাসানী, ডেমোক্রেটিক লীগ (ডিএল) ও পিপলস লীগ। পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল যোগ দিলে জোটটি ২০ দলীয় জোটে রূপান্তরিত হয়।
বর্তমানে বিএনপির নেতৃত্বে আছেন খালেদা জিয়া। তিনি বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। প্রতিবার নির্বাচনে তিনি পাঁচটি আসনে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। ২০০৭ সাল থেকে সাবেক সংসদীয় হুইপ ও জ্যেষ্ঠ নেতা খন্দকার দেলোয়ার হোসেন দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালের মার্চে তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করার পর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে দলের মহাসচিবের ভার দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন সফলতার সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করায় ফখরুলকে ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ বিএনপির সপ্তম মহাসচিবের দায়িত্ব দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনিই বিএনপির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রতিষ্ঠার পর বিএনপি অনেকবার ভাঙনের মুখোমুখি হয়। এর প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে কয়েকজন জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর দল ছেড়ে দেন। এর মধ্যে মওদুদ আহমেদ অন্যতম। ২০০১ সালে নির্বাচনের পর বিএনপি মনোনয়নে দলের প্রথম মহাসচিব অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী দেশের রাষ্ট্রপতি হন। কিন্তু কিছু কারণে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে বিএনপি দূরত্ব সৃষ্টি হয়। ফলে প্রায় ছয় মাস রাষ্ট্রপতি থাকার পর তিনি পদত্যাগ করেন। বি. চৌধুরী বিএনপির একটি অংশ নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল বিকল্পধারা বাংলাদেশ গঠন করেন। ২০০৬ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের দিন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমেদ বিএনপি সরকারের কিছু নেতাকর্মী, মন্ত্রী ও এমপিদের নিয়ে বিএনপি ত্যাগ করেন এবং অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারার সঙ্গে একীভূত হয়ে নতুন রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি সংক্ষেপে এলডিপি গঠন করেন।
বিএনপির লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক উন্নয়ন, গণতন্ত্রায়ন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্য এবং জনগণের মধ্যে স্ব-নির্ভরতার উত্থান ঘটানো। এগুলোর ভিত্তিতে জিয়াউর রহমান তার ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। বিএনপির রাজনীতির মূল ভিত্তি ছিল— * সৃষ্টিকর্তার ওপর পূর্ণ বিশ্বাস ও আস্থা * বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ
১. বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদভিত্তিক ইস্পাতকঠিন গণঐক্যের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও গণতন্ত্র সুরক্ষিত ও সুসংহত করা। ২. উৎপাদনের রাজনীতি, মুক্তবাজার অর্থনীতি এবং জনগণের গণতন্ত্রের মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক মানবমুখী অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন। ৩. জাতীয়তাবাদী ঐক্যের ভিত্তিতে গ্রামগঞ্জে জনগণকে সচেতন ও সুসংগঠিত করা এবং সার্বিক উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা ও প্রকল্প রচনা ও বাস্তবায়ন ক্ষমতা ও দক্ষতা জনগণের হাতে পৌঁছে দেওয়া। ৪. এমন এক সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা যেখানে গণতন্ত্রের শিকড় সমাজের মৌলিক স্তরে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মনে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত হয়। ৫. এমন একটি সুস্পষ্ট ও স্থিতিশীল সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার নিশ্চিতি দেওয়া যার মাধ্যমে জনগণ নিজেরাই তাদের মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতি আনতে পারবেন। ৬. বহুদলীয় রাজনীতির ভিত্তিতে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একটি সংসদীয় পদ্ধতির সরকারের মাধ্যমে স্থিতিশীল গণতন্ত্র কায়েম করা এবং সুষম জাতীয় উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি আনা। ৭. গণতান্ত্রিক জীবনধারা ও গণতান্ত্রিক বিধি ব্যবস্থার রক্ষাকবচ হিসেবে গণনির্বাচিত জাতীয় সংসদের ভিত্তি দৃঢ়ভাবে স্থাপন করা এবং জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা। ৮. রাজনৈতিক গোপন সংগঠনের তৎপরতা এবং কোনো সশস্ত্র ক্যাডার, দল বা এজেন্সি গঠনে অস্বীকৃতি জানানো ও তার বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা। ৯. জাতীয় জীবনে মানবমুখী সামাজিক মূল্যবোধের পুনরুজ্জীবন এবং সৃজনশীল উৎপাদনমুখী জীবনবোধ ফিরিয়ে আনা। ১০. বাস্তবধর্মী কার্যকরী উন্নয়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাতীয় জীবনে ন্যায়বিচারভিত্তিক সুষম অর্থনীতির প্রতিষ্ঠা, যাতে সব বাংলাদেশি নাগরিক অন্ন, বস্ত্র, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও শিক্ষার ন্যূনতম মানবিক চাহিদা পূরণের সুযোগ পায়। ১১. সার্বিক পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দান করা ও সক্রিয় গণচেষ্টার মাধ্যমে গ্রাম বাংলার সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। ১২. নারী সমাজ ও যুব সম্প্রদায়সহ সব জনসম্পদের সুষ্ঠু ও বাসভিত্তিক সদ্ব্যবহার করা। ১৩. বাস্তবধর্মী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ এবং সুসামঞ্জস্যপূর্ণ শ্রম ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক স্থাপন এবং সুষ্ঠু শ্রমনীতির মাধ্যমে শিল্পক্ষেত্রে সর্বোচ্চ উৎপাদন নিশ্চিত করা। ১৪. বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, বাংলাদেশের সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও বাংলাদেশের ক্রীড়া সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও প্রসার সাধন। ১৫. বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশি জনগণের ধর্ম ইসলাম এবং অন্যান্য ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ দান করে বাংলাদেশের জনগণের যুগপ্রাচীন মানবিক মূল্যবোধ সংরক্ষণ করা, বিশেষ করে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা সম্প্রসারণ ও বৃহত্তর জাতীয় তাদের অধিকতর সুবিধা ও অংশগ্রহণের সুযোগের যথাযথ ব্যবস্থা করা। ১৬. পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জোট নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব, প্রীতি ও সমতা রক্ষা করা। সার্বভৌমত্ব ও সমতার ভিত্তিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে, তৃতীয় বিশ্বের মিত্র রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে এবং ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে প্রীতি ও সখ্যতার সম্পর্ক সুসংহত এবং সুদৃঢ় করা।
শুরু থেকেই বিএনপির লক্ষ্য ছিল জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। বিএনপি তাদের পররাষ্ট্রনীতিতে নিরপেক্ষতা ধারণ করে। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে দলটি।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল, অঙ্গ সংগঠন, জাতীয়তাবাদী যুবদল, জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবকদল, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধাদল, জাতীয়তাবাদী কৃষক দল, জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবীদল, জাতীয়তাবাদী তাঁতিদল, জাতীয়তাবাদী ওলামাদল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস), জাতীয়তাবাদী মহিলাদল।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব), এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট, শত নাগরিক কমিটি।
মন্তব্য করুন