যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টার মিথ্যা পরিচয় দেওয়া মিয়ান আরেফিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেবে তদন্ত সংস্থা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এজন্য আজ মঙ্গলবার কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। প্রয়োজনে ওই আসামিকে কারা ফটকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে। ডিবির দায়িত্বশীল সূত্র কালবেলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মিয়ান আরেফিকে গত বৃহস্পতিবার পাঁচদিনের রিমান্ডে পায় ডিবি। এরমধ্যেই খবর বের হয়, তদন্ত সংস্থা দুই দফা কারাগারে আনতে গেলেও কারা কর্তৃপক্ষ আসামিকে ডিবির কাছে হস্তান্তর করেনি। এমন পরিস্থিতি আজ ডিবি প্রধান নিজেই কারাগারে যাচ্ছেন।
মিয়ান আরেফি বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত মার্কিন নাগরিক। তার পৈত্রিক নিবাস সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া। তার প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফি। গ্রামের লোকজন তাকে বেলাল নামেও চেনে।
তিনি বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে উসকানিমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ কথা বলেন। ওই সময় তার পাশে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী, বিএনপি নেতা ইশরাকসহ কয়েকজন ছিলেন। এ ঘটনায় পল্টন থানায় ‘মিথ্যা পরিচয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের’ অভিযোগসহ রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি মামলা করেন। এরই মধ্যে মিয়ান আরেফি ও চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ আমলে নেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ায় ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে পল্টন থানায় হওয়া মামলার সঙ্গে এখন রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধের ধারা যুক্ত করে তদন্ত চলছে। মামলাটি ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) মতিঝিল বিভাগ তদন্ত করছে।
২৯ অক্টোবর দেশ ছাড়ার সময় বিমানবন্দর থেকে মিয়ান আরেফিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন আদালত তাকে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে রাখার আদেশ দেন। একই মামলায় গত মঙ্গলবার হাসান সারওয়ার্দীকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করে পরদিন ৮ দিনের রিমান্ডে নেয় ডিবি। তিনি এখন ডিবি হেফাজতে রয়েছেন। গ্রেপ্তারের পর মিয়ান আরেফির দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে সারওয়ার্দীর বক্তব্য না মেলায় গত বৃহস্পতিবার ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে মিয়ান আরেফির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবি সূত্র জানায়, রিমান্ড মঞ্জুর হওয়ার পর গত বৃহস্পতিবার ডিবির কর্মকর্তারা মিয়ান আরেফিকে আনতে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে যান; কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাকে ডিবির কাছে দেয়নি। গত শনিবার ডিবি কর্মকর্তারা ফের তাকে হেফাজতে পেতে কারাগারে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেন। সেদিনও কারা কর্তৃপক্ষ তাকে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে দেয়নি।
অবশ্য কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা দৈনিক কালবেলাকে জানিয়েছিলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ওই আসামিকে তদন্ত কর্মকর্তা চাইলে অবশ্যই হেফাজতে নিতে পারবেন। তবে রোববার পর্যন্ত তাকে তদন্ত কর্মকর্তা হেফাজতে নেননি।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, আজ স্বয়ং ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান ওই আসামি আনতে কারাগারে যাবেন। এদিন তদন্তের প্রয়োজনে কারা ফটকেই জিজ্ঞাসাবাদ বরা হতে পারে মিয়ান আরেফিকে।
মন্তব্য করুন