ভিন্নমতের নামে দেশবিরোধিতা সহ্য করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সোমবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দক্ষিণের অন্তর্গত সংসদীয় আসনভিত্তিক অবস্থান কর্মসূচিতে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াত করা পুলিশ হত্যা, কাকরাইল মসজিদ ও রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ও দেশপ্রেমিক সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও অবৈধ অবরোধের প্রতিবাদে এ অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ সাইদ খোকন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাইন উদ্দিন রানা, সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম রেজাউল করিম রেজা।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, গত এক মাস ধরে একটা অবৈধ দলের অবৈধ কর্মসূচি চলছে। কিন্তু আপনারা কী দেখছেন। তারা এক দিকে অবৈধ অবরোধ দিচ্ছে অন্যদিকে রাস্তায় ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে। এতে বোঝা যায় তাদের অবৈধ অবরোধ কর্মসূচি এদেশের জনগণ সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, আমার একটি প্রশ্ন, এই হরতাল বা অবরোধের মানেটা কী? এই কর্মসূচির মাধ্যমে আসলেই কি সরকারের পতন ঘটানো সম্ভব? এটা কি কোনো প্রতিবাদের প্রতীকি ভাষা? তাহলে জনগণের সম্পৃক্ততা কোথায়? জনগণের সম্পৃক্ততা ছাড়া এই কর্মসূচি অর্থহীন। আর যদি তারা সরকারের পতনই না ঘটাতে পারে তাহলে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে লাভ কি? এ ধরনের প্রশ্ন সাধারণ মানুষের সৃষ্টি হয়েছে।
পরশ বলেন, বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে বানচাল করা। যে কোনোভাবে সরকারের পতন ঘটিয়ে একটি অনির্বাচিত সরকারকে গদিতে বসানো। এই দুই উদ্দেশ্য তাদের সফল হতে পারেনি। আমাদের যুবলীগের নেতাকর্মীদের জন্য। এসব অপশক্তি যারা দেশবিরোধী, যারা এই দেশের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না, যারা এখনও পাকিস্তানি ভাবধারার বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চায়, যারা মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষক, যারা আমাদের সনাতন ভাইবোনদের ওপর অত্যাচার করেছে এবং করার সুযোগ খোঁজে তাদের যুবলীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিহত করেছেন। আপনাদের কারণেই এই দেশবিরোধী অপশক্তি ইঁদুরের গর্তে ঢুকে গিয়েছে। এই ইঁদুরের গর্ত থেকে বের হয়ে তারা দুএকটি বাসে আগুন দিচ্ছে, ককটেল মারছে।
আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের সম্পদ নষ্ট করে জনগণের সমর্থন অর্জন করা যায় না। এই কৌশল কোনো দিন কাজে দিবে না। আপনারা জানেন আমরা দাবি তুলেছি এই সন্ত্রাসী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনকে নিষিদ্ধ করে তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। কারণ আমাদের যুক্তি একটাই, এই দেশে কোনো দেশবিরোধী, স্বাধীনতাবিরোধী, যারা এই দেশের অস্তিত্বকে বিশ্বাস করে না তাদের তো রাজনীতি করার অধিকার নাই।
তিনি আরও বলেন, এই দেশে আওয়ামী বিরোধী মতবাদ থাকতে পারে এবং ভিন্নমত গণতন্ত্রের অলংকার। আমরা বিশ্বাস করি একটি প্রগতিশীল, উদার মনার রাজনৈতিক দল সৃষ্টি হবে। যারা আওয়ামী বিরোধী হতে পারে, ভিন্নমতের হতে পারে কিন্তু দেশবিরোধী কোনো শক্তি আমরা চাই না। ভিন্নমতের নামে দেশবিরোধিতা সহ্য করা হবে না। এই দেশকে যারা মৌলবাদী দেশ বানাতে চায় এবং এই দেশের যারা ক্ষতি করতে চায় তাদের এই যুবসমাজই প্রতিহত করবে।
সাইদ খোকন বলেন, সারা দেশে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে যুবলীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ যুবলীগই পারবে সব অপশিক্তকে প্রতিহত করে নৌকাকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে।
এ ছাড়াও ঢাকা মহানগর যুবলীগ উত্তরের অন্তর্গত ঢাকা-১১ সংসদীয় আসনে সুবাস্তু টাওয়ার, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২ সংসদীয় আসনে যুবলীগ চত্বর, ফার্মগেইট, ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসনে শ্যামলী, ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনে মিরপুর-১০ গোল চত্বর, ঢাকা-১৬ সংসদীয় আসনে মিরপুর-১১ বাস স্ট্যান্ড ও ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনে আজমপুর, উত্তরায় এবং ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের অন্তর্গত ঢাকা-২ সংসদীয় আসনে ৫৭নং ওয়ার্ড, কামরাঙ্গীরচর লোহার ব্রিজ, ঢাকা-৪ সংসদীয় আসনে শ্যামপুর ইকো পার্কের সামনে, ঢাকা-৫ সংসদীয় আসনে শনিরআখড়া দনিয়া কলেজের সামনে, ঢাকা-৭ সংসদীয় আসনে চকবাজার মোড়, ঢাকা-৮ সংসদীয় আসনে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ও ঢাকা-৯ সংসদীয় আসনে কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ বৌদ্ধ মন্দির সংলগ্নে ও ঢাকা-১০ সংসদীয় আসনে ধানমন্ডি-৩২ নম্বরে সংসদীয় আসনভিত্তিক অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. হাবিবুর রহমান পবন, ইঞ্জিনিয়ার মৃনাল কান্তি জোদ্দার, মো. তাজউদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশা, মুহাম্মদ বদিউল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মো. মাজহারুল ইসলাম, ডা. হেলাল উদ্দিন, মো. সাইফুর রহমান সোহাগ, জহির উদ্দিন খসরু, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সাদ্দাম হোসেন পাভেল, শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল হাই, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমান সরদার, উপদপ্তর সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা, উপগ্রন্থণা ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ নবীরুজ্জামান বাবু, উপস্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. মো. মাহফুজার রহমান উজ্জ্বল, উপধর্ম সম্পাদক হরে কৃষ্ণ বৈদ্যসহ কেন্দ্রীয় মহানগর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড যুবলীগের নেতারা।
মন্তব্য করুন