কারাগারে কাটল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ৭৭তম জন্মদিন। প্রতি বছর জন্মদিনের ভোরে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বড় মেয়ের টেলিফোনে ফখরুলের ঘুম ভাঙলেও এবার ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে ছোট কক্ষে সকালটা কেটেছে ‘একাকীত্বে’।
১৯৪৮ সালের ২৬ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের জন্ম। শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) তার ৭৭তম জন্মদিন। গত ২৯ অক্টোবর থেকে কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম। গতকাল বেলা ১১টায় গুলশানের বাসা থেকে স্ত্রী রাহাত আরা বেগম, ছোট মেয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মির্জা ফখরুলের বোনকে নিয়ে কারাগারে যান।
রাহাত আরা বেগম বলেন, ‘উনার শরীরটা ভালো না। ওয়েট কমে গেছে পাঁচ কেজি। বুঝতেই পারছেন, মনটা আমার ভালো না। আমরা তিনজন সকালে কেরানীগঞ্জ গিয়েছিলাম। দেখা হয়েছে, কিছু সময় থেকে চলে এসেছি। দোয়া করবেন উনার জন্য।’
দুই মেয়ে আর স্ত্রীকে নিয়ে এই প্রবীণ রাজনীতিবিদের জীবন। বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। ক্যানবেরায় ফেডারেল মেডিকেল কাউন্সিলের সিনিয়র সাইন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহ ঢাকার ধানমন্ডিতে একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে শিক্ষকতা করেন।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেওয়ার পরের দিন গুলশানের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় দলটির মহাসচিবকে। প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত ২৮ অক্টোবর পল্টন ও রমনা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মোট ১১টি মামলা করে। এসব মামলার ৯টির এজহারে মির্জা ফখরুলের নাম রয়েছে। পল্টন ও রমনা থানার পৃথক নয়টি মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিন হয়েছে মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে। আইনজীবীরা জানান, এখনো আরও একটি মামলায় তার জামিন বাকি আছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরর অর্থনীতি বিভাগের কৃতি ছাত্র মির্জা ফখরুল ছাত্রজীবনে বাম রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন তিনি। জাতীয় রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার আগে ঢাকা কলেজসহ কয়েকটি সরকারি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। সরকারি চাকরি ছেড়ে সক্রিয় রাজনীতিতে যুক্ত হন মির্জা ফখরুল। ২০১৬ সাল থেকে বিএনপির মহাসচিব হিসেবে টানা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অতীতেও কয়েক দফা গ্রেপ্তার হয়ে বন্দিত্ব জীবন কাটাতে হয়েছে এই প্রবীণ রাজনীতিককে।
মন্তব্য করুন