আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনেক হয়েছে। এ দেশের মানুষ আপনাদের আর সহ্য করতে রাজি না। তিনি বলেন, ‘পদত্যাগ করেন। সংসদ বিলুপ্ত করেন। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে তার অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে জণগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেন। আগামী ১৯ জুলাই নতুন কর্মসূচি দিয়েছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। এটা বিজয়ের পদযাত্রা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হচ্ছে একটি বক ধার্মিক দল। বক যেমন পুকুর-জলাশয়ের ধারে একপায়ে বসে থাকে মাছ ধরার জন্য, তারাও (আওয়ামী লীগ) সুযোগের অপেক্ষায় বসে আছে ফের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য।’
রোববার (১৬ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নগরের কাজীর দেউড়িতে বিএনপির দলীয় কার্যালয় নাসিমন ভবনের সামনের সড়কে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে এ সমাবেশ হয়।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন বলে বেড়াচ্ছে তাদের অধীনেই নাকি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সবাই যেন নির্বাচনে অংশ নেয়। এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম। আসলে আওয়ামী লীগের চরিত্রই ভালো না। আর নির্বাচন কমিশন হচ্ছে একটা ঠুটো জগন্নাথ, তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আওয়ামী লীগ যা বলে নির্বাচন কমিশন তা-ই বাস্তবায়ন করে।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘সবসময় গোয়েন্দা দিয়ে, ভয় দেখিয়ে, মামলা দিয়ে কাজ হবে না। অনেক করেছেন। আমার ভাইদের গুম করেছেন। আমাদের তিনজন সংসদ সদস্যকে খুন করেছেন। আমাদের নেতাকর্মীদেরও খুন করেছেন। অনেক মায়ের বুক খালি করেছেন। অনেক স্ত্রী স্বামীহারা হয়েছেন। শিশুরা এখনও তাদের বাবার দিকে তাকিয়ে থাকে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। তাতে কি সভা বন্ধ করতে পেরেছেন? তাতে কি বাংলাদেশের মানুষকে দমাতে পেরেছেন? ‘দিনে দিনে বাড়িছে দেনা। শুধিতে হইবে ঋণ।’ মানে মানে বিদায় হন।’
সরকারকে ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণের দাবি মেনে নিয়ে পদত্যাগ করুন। দফা এক দাবি এক; শেখ হাসিনার পদত্যাগ। ফয়সালা হবে রাজপথে। আর কোনো সময় নেই, সময় শেষ। আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি। আবারও বলছি, ভালো ভালোয় পদত্যাগ করেন, সংসদ ভেঙে দিন।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও বরকতউল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, বান্দরবান বিএনপি নেতা ম্যামাচিং প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক কাজী শেখ নুরুল্লাহ বাহার।
সমাবেশে আমীর খসরু বলেন, ‘এবার খেলা শেষ। বাংলাদেশের জণগণ নিরপেক্ষভাবে তাদের ভোট প্রয়োগ করে সরকার ও সংসদ গঠন করবে। তারা জণগণের কাছে দায়ী থাকবে; জবাবদিহি থাকবে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু বিদেশির আনাগোনা লক্ষ্য করেছেন। তারা কি ভারতে গিয়েছেন? শ্রীলঙ্কা গিয়েছেন? কেন তারা বাংলাদেশে? তারা এসেছেন আস্তানা ভেঙে দেওয়ার জন্য।’
মন্তব্য করুন