কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৪, ০৯:২৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

প্রস্তাবিত বাজেট দুর্নীতিবান্ধব : খেলাফত মজলিস

পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে বাজেট পর্যালোচনা বৈঠক করেছে খেলাফত মজলিস। ছবি : কালবেলা
পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে বাজেট পর্যালোচনা বৈঠক করেছে খেলাফত মজলিস। ছবি : কালবেলা

খেলাফত মজলিস আয়োজিত বাজেট পর্যালোচনা সভায় বক্তারা বলেছেন, প্রস্তাবিত বাজেটকে জনবান্ধব বলার সুযোগ নেই বরং দুর্নীতিবান্ধব বলা যায়। প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেশে ঘুষ-দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে। অন্যদিকে সাধারণ জনগণের মাথার ওপর ঋণ ও করের বোঝা বাড়ানো হচ্ছে।

বক্তারা বলেন, এখন বাজেট মানেই জনগণের উপর নতুন নতুন কর আর রাষ্ট্রের ঋণের বোঝা বৃদ্ধি। প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না। প্রস্তাবিত বাজেটের মাধ্যমে দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। দেশের বাজেট ও অর্থনীতিকে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের খবরদারি ও অলিগার্কদের প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে। ঋণখেলাপি, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার রোধ করতে হবে।

শনিবার (৮ জুন) বিকেলে পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর আহমদ আলী কাসেমীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক মো. আবদুল জলিলের পরিচালনায় জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা বৈঠক হয়।

এতে আলোচনা করেন সাবেক যুগ্ম সচিব নূরুল আলম, ব্যাংকার আবু সালেহীন, মো. জিল্লুর রহমান, মাওলানা আজীজুল হক, অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শায়খুল ইসলাম, মো. গিয়াস উদ্দিন, সৈয়দ মুহাম্মদ সানা উল্লাহ, ড. আনিসুর রহমান শিপলু, সেলিম হোসাইন, রাশেদুল ইসলাম, এইচএম এরশাদ, জামিরুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমান, মাওলানা আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।

আলোচকরা বলেন, ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ বাজেটে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার বিশাল অংকের ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে দেশ-বিদেশ থেকে চড়া সূদে ঋণ নিতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে দেশীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ নিবে। এতে বেসরকারি ও ব্যক্তিগত খাতে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। বাজেট ব্যয়ের বিশাল অংশ খরচ হবে ঋণের সুদ পরিশোধে অর্থাৎ ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা যা বাজেট ব্যয়ের ২২ শতাংশ। বাজেট ব্যয়ের বৃহত্তম খাত হচ্ছে সুদ পরিশোধ। পরিচালন ব্যয় ও সুদ পরিশোধের মতো অনুন্নয়ন খাতেই ব্যয় হবে বাজেটের অধিকাংশ অর্থ। আর প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রাও বাস্তবসম্মত নয়। এ কথায় প্রস্তাবিত বাজেট জাতীয় ঋণের বোঝা বৃদ্ধির বাজেট।

তারা বলেন, মুদ্রাস্ফীতির ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা। প্রস্তাবিত এ বাজেট দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে কোনো ভূমিকা রাখবে না, বরং নতুন করে বহু জিনিসপত্রের দাম আরেক দফা বাড়বে। বাজেটে মোবাইল ফোনে কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। একজন ভোক্তা ১০০ টাকা রিচার্জ করলে মাত্র ৬৮ টাকার কথা বলতে পারবে। এতে করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের পকেট কাটার একটা ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আলোচকেরা আরও বলেন, ঋণনির্ভর বাজেটের কারণে জনগণের ওপর জাতীয় ঋণের বোঝা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভয়াবহ সংকটের নিপতিত হতে বাধ্য। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ তলানিতে গিয়ে ঠেকার উপক্রম হয়েছে। দেশের প্রবৃদ্ধি ক্রমশ কমে যাচ্ছে। সামনে দেশকে বড় ধরনের ঘাটতি মোকাবিলা করতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজেটে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। মূল্যস্ফীতির অস্বাভাবিক সংকট কীভাবে সামলানো হবে, তার সুস্পষ্ট পরিকল্পনা বাজেটে নেই। এতে জনগণকে মূল্যস্ফীতির আরও বড় ধরনের চাপে পড়তে হতে পারে। ধারাবাহিক মুদ্রাস্ফীতি সত্ত্বেও করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হয়নি। গরিবের পকেট কেটে কর বের করার বাজেট কখনো জনবান্ধব হতে পারে না।

বৈঠকে দেশের বাজেট ও অর্থনীতিকে আইএমএফ, বিশ্বব্যাংকের খবরদারি ও অলিগার্কদের প্রভাব মুক্ত রাখা, ঋণখেলাপি, কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার রোধ করার আলোচনা হয়। ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ, বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফেরৎ আনা, মূল্যস্ফীতি রোধ ও প্রস্তাবিত বাজেটে আরোপিত মোবাইলে কথা বলার উপরসহ সব ধরনের বর্ধিত কর প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ম্যানসিটি ছাড়ছেন আর্জেন্টিনার ‘নতুন মেসি’

‘৫১ লাখ টাকার স্টেডিয়াম ১৪ কোটিতে করার অনুমোদন’, কী ব্যাখ্যা দিলেন সচিব

জনপ্রিয় ব্রিটিশ পত্রিকায় বাংলাদেশ নারী দলের প্রশংসা

ইউআরপি ও ডিএলআর মডিউল প্রস্তুত / মালয়েশিয়ায় শ্রমিক যাবে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে

রাশিয়া শক্তিশালী, এটা মেনে নিতেই হবে : ট্রাম্প

ময়মনসিংহ থেকে বাস চলাচল শুরু, ভাঙচুরের ঘটনায় কমিটি

আইপিএলে ভালো করলেও ভারত দলে জায়গা নিশ্চিত নয়

ফেব্রুয়ারির কত তারিখে রোজা শুরু হতে পারে 

দুই শিক্ষককে প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ঘটনায় আহমাদুল্লাহর উদ্বেগ

সরকারি কর্মচারীরা দাফনের জন্য পাবেন টাকা

১০

দেড় যুগেও নির্মাণ হয়নি জহির রায়হান মিলনায়তন

১১

দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা, দুই উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

১২

৫ অভ্যাসে বার্ধক্যেও ভালো থাকবে হৎপিণ্ড

১৩

অনশন প্রত্যাহার করল বেরোবি শিক্ষার্থীরা

১৪

‘ভুল চিকিৎসায়’ একদিনে দুই শিশুর মৃত্যু

১৫

সরকারি কর্মচারীদের জন্য সুখবর

১৬

কাভার্ডভ্যানের চাপায় মা-মেয়ের মৃত্যু

১৭

মাস্ক পরে হাসপাতালে দীপু মনি

১৮

ছাত্র সংসদের দাবিতে ‘আমরণ অনশন’ ঘিরে বিভক্ত বেরোবির শিক্ষার্থীরা

১৯

বন্ধুত্ব চাইলে সীমান্ত হত্যা বন্ধ করুন : লায়ন ফারুক

২০
X