মাতৃভাষায় সাংবাদিকতার সুরক্ষা ও বিকাশে অন্তর্ভুক্তিমূলক গণমাধ্যম নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সার্কভুক্ত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
দুই দিনব্যাপী ‘মাতৃভাষায় সাংবাদিকতা’ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে গৃহীত সাত দফা ঘোষণার মাধ্যমে ‘কাঠমান্ডু ডিক্লারেশনে’ এ আহ্বান জানানো হয়।
ঘোষণাপত্রে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানদের নীতিগত অঙ্গীকার ও রাষ্ট্রীয় সহায়তার ওপর জোর দেওয়া হয়। স্থানীয় ও আদিবাসী ভাষাভিত্তিক গণমাধ্যমের বিকাশ ও টিকে থাকার জন্য বরাদ্দ বৃদ্ধি করার সুপারিশ করা হয়।
সম্প্রদায় ও গোষ্ঠীগত ভাষায় সাংবাদিকতাকে সাংস্কৃতিক সংরক্ষণ ও সামাজিক ন্যায়বিচারের হাতিয়ার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এসব সম্প্রদায় যেন নিজেদের কথা বলার ও প্রাসঙ্গিক তথ্য পাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত প্ল্যাটফর্ম পায়, তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
ন্যাশনাল ফোরাম অব নিউয়ার জার্নালিস্টস (এনএফএনজে)-এর উদ্যোগে এবং সার্ক জার্নালিস্ট ফোরাম (এসজেএফ) ও ফেডারেশন অব নেপাল ইন্ডিজেনাস জার্নালিস্টস (ফনিজ)-এর সহায়তায় অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে সার্ক অঞ্চল থেকে আসা সাংবাদিকরা অংশ নেন।
সম্মেলনটি শুক্রবার (১৩ জুন) উদ্বোধন করেন নেপালের হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার দেবরাজ ঘিমিরে এবং শনিবার (১৪ জুন) সমাপ্তি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যপুর থিমি মিউনিসিপ্যালিটির মেয়র সুরেন্দ্র শ্রেষ্ঠ।
ঘোষণায় মাতৃভাষাভিত্তিক সাংবাদিকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং ফেলোশিপ আয়োজনের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি মাতৃভাষাভিত্তিক সাংবাদিকতায় অর্থায়ন, কারিগরি সহায়তা ও দক্ষতা উন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছেG
সমাপনী অনুষ্ঠানে মেয়র সুরেন্দ্র শ্রেষ্ঠ বলেন, এই সম্মেলন মাতৃভাষা সাংবাদিকতা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে, সার্ক জার্নালিস্টস ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজু লামা সম্মেলনের গৃহীত প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগে সার্কভুক্ত দেশগুলোর সমর্থন কামনা করেন।
ফনিজ সভাপতি লাকি চৌধুরী, এসজেএফের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মো. আবদুর রহমান (বাংলাদেশ), বিহার চ্যাপ্টারের সভাপতি ড. শশী ভূষণ কুমার, সম্মেলন সমন্বয়ক সুনীল মহার্জন এবং এনএফএনজের মহাসচিব কেকে মানান্ধর তাদের বক্তব্যে মাতৃভাষা সাংবাদিকতার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
ঘোষণাপত্রে জানানো হয়, সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো সার্কভুক্ত দেশগুলোর সরকার প্রধানদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে উপস্থাপন করা হবে এবং জাতীয় বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধিসহ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন