

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতে ভারত ইতিবাচক সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তাকে চেয়েছি যেহেতু তিনি কনভিক্টেড, সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা তাকে শাস্তি দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ইতিবাচক কোনো সাড়া আমরা পাইনি। এটা নিয়ে স্পেকুলেট (অনুমান) আমার মনে হয় না করাই ভালো। দেখা যাক কী হয়।’
তিনি জানান, এ ধরনের ঘটনায় ঝট করে এক দিনে, সাত দিনে কোনো পরিবর্তন ঘটে না। আমরা অপেক্ষা করব, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ থেকে দেখি কী প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়।
তারেক রহমানের দেশে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘তারেক সাহেব কখন আসবেন সে সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। উনার স্ত্রী সম্ভবত আসছেন বা পৌঁছে গেছেন। বেগম জিয়াকে আজকে নেওয়া হচ্ছে না। এয়ারক্রাফট নিয়ে একটু টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার আসার উদ্দেশ্যের সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা চেষ্টা করেছি বিশেষ করে উত্তরবঙ্গকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়। চাইনিজ সহায়তায় ১ হাজার বেডের হসপিটাল হবে নীলফামারী জেলায়। এমনভাবে প্ল্যান করা হয়েছে যে, শুধু নীলফামারী না—এমনও চিন্তা করা হচ্ছে যে ক্ষেত্রবিশেষে আশপাশের দেশগুলোও বিশেষ করে ভারত-ভুটান থেকেও যেন মানুষ চিকিৎসা নিতে আসতে পারে।’
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আর একটা জিনিস চেষ্টা করা হচ্ছে বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানো বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল ক্ষেত্রে যদি কিছু করা যায়। বিপুলসংখ্যক যুবক মানুষ যাদের কোনো চাকরি-বাকরি নেই। এটা নিয়ে সবচেয়ে বেশি চেষ্টা চলছে। আমাদের সময় বেশি নেই। আমরা চেষ্টা করছি খুব সঠিকভাবে নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিতদের হাতে দেশের ভার দিয়ে দায়িত্ব থেকে অবসর নিতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে আশা করছিলেন যে, আমরা সব রিফর্ম করে দিয়ে যাব, সেটা আসলে সম্ভব নয়। আমরা শুরু করে দিয়ে যাব বাকিটা নির্বাচিতরা জনগণের কাছে আসবে, ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে। যারা ক্ষমতায় আসবেন আশা করি তারা সরে যাবেন না, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
আরাকান আর্মি বাংলাদেশিদের ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এ নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্ভব নয়, কারণ তারা নন স্টেট। মিয়ানমারের সঙ্গে যেমন আলোচনা করতে পারি তাদের সঙ্গে তেমন করতে পারি না। যেহেতু আমাদের স্বার্থ আছে সেহেতু আমাদের বিষয়টি দেখতে হবে। এই ঘটনা যাতে কমে বা না ঘটে—এর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে চার দিনের সফরে রংপুরে এসে শুক্রবার তিনি রংপুর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান পরিদর্শন করছেন। শনিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং বিকেলে রংপুর ক্যাডেট কলেজ পরিদর্শন করার কথা রয়েছে। পরদিন রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। একই দিন বিকেলে সৈয়দপুর বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
মন্তব্য করুন