বর্তমান সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে মানুষের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব ততই বেড়ে চলেছে। মানুষে মানুষে এই দূরত্বের কারণে সম্পর্কের মধ্যে অসামঞ্জস্যতা তৈরি হচ্ছে। ব্যস্ততার এই যুগে পারিবারিক বন্ধন এবং সম্প্রীতি ধরে রাখাই এখন সবার মূল দায়িত্ব। একটি পরিবারের সন্তানের বড় হয়ে ওঠার জন্য বাবা-মায়ের দেখভালের যে কর্তব্য সেটা পালন করতে হবে। তাহলে সন্তানও বাবা-মায়ের প্রতি তাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করবে।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে উদযাপিত মহানগর মেলা দিবসের অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনের পর দিনব্যাপী বিভিন্ন আয়োজনের মাধ্যমে তা পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতীয় সংগীত পরিবেশনা করা হয়। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী মনীন্দ্র কুমার নাথ এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রমেন মণ্ডল। অনুষ্ঠানে মহানগর পরিবারের পক্ষ থেকে কর্মবীর চিত্ত রঞ্জন মজুমদার এবং নারীমুক্তির সংগ্রামে নিবেদিতপ্রাণ শ্রীমতী সাহাকে গুণীজন সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে ঢাবি উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির এই পরিবার দিবসের আয়োজনকে আমি সাধুবাদ জানাই। এখানে সবাই তাদের পরিবার নিয়ে এসে একসঙ্গে মিলিত হয়েছেন। সবার সঙ্গে সবার দেখা সাক্ষাৎ হচ্ছে, আন্তরিকতা বাড়ছে। এই বিষয়টিই আমাদের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমি অনেক সময়য় বিভিন্ন ঘটনা শুনতে পাই, বাবা-মা তাদের সন্তানদের সময় দিতে পারছেন না। সন্তানরা তাদের বাবা-মা কে কাছে পায় না। এজন্য তাদের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়। যার কারণে মাঝে মাঝে সন্তানরা ভুল পথে চলে যায়। এই জিনিসটা যেন না হয় সেদিকে আমদের খেয়াল রাখতে হবে।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, বর্তমান সমাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির কারণে মানুষের জীবনে কাজের চাপ বেড়ে গেছে। সামাজিক দিক রক্ষা করার চেয়ে অর্থ উপার্জনের দিকেই মানুষের মনোযোগ বেশি। এতে করে মানুষে মানুষে একটি দূরত্ব তৈরি হয়েছে। সেই জিনিসটা যেন না হয় সেজন্য আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। নিজেদের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সামাজিক সম্প্রীতি ধরে রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রী মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির মহানগর পরিবার দিবস একটি সম্প্রীতির অনুষ্ঠান। আমাদের এই মিলনমেলা সবসময় চালু থাকবে। আমাদের সব পরিবারের মধ্যে যেন আত্মিক সম্পর্ক গড়ে উঠে সেটাই আমাদের কাম্য। আমাদের সন্তানদের খেয়াল রাখাও আমাদের কর্তব্য। আমি নিবেদন করবো প্রত্যেক পরিবারে এমন সন্তান যেন তৈরি হয় যেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে তারা অবদান রাখতে পারে।
মন্তব্য করুন