প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক বিমান রাত ১টা ৪০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা শুরু করে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সফরসূচি অনুযায়ী, ড. ইউনূস ২২ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন এবং ২৬ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন।
এ ছাড়া তিনি একাধিক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক এবং গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ভাষণে তিনি বিগত এক বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারমূলক উদ্যোগ, ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রত্যাশা এবং ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার তুলে ধরবেন।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হিসেবে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
পোস্টে রাশেদ তিনি লেখেন, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাগণ জাতিসংঘ সফরে। তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিজেদের প্রটেকশনের স্বার্থে নিয়ে গেছেন। তা ছাড়া সেখানে রাজনীতিকদের কোনো কাজ নেই। স্বাভাবিকভাবে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবে। হয়তো তারা গালিগালাজ বা উপদেষ্টাদের অপদস্ত করার মতো ঘটনা ঘটাবে। এরই মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা নিরাপত্তার জন্য ব্যানার নিয়ে নেমে গেছে। পাশাপাশি আওয়ামী লীগও আছে। বিদেশের মাটিতে মুখোমুখি অবস্থান!
তিনি বলেন, কল্পনা করেন, যদি রাজনৈতিক প্রতিনিধিরা না যেত, তাহলে কি বিএনপি- জামায়াতের নেতাকর্মীরা আসত? না আসলে পরিণতি কী হতো? অর্থাৎ সরকারের উপদেষ্টারা যত বড় কথাই বলুক না কেন, তারা টিকেই আছে রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থন ও সহযোগিতায়। আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, বৈষম্য দূর করতে এসে এই উপদেষ্টা পরিষদ আরও বৈষম্যের উৎপাদন করেছে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাড়ে তেরো মাসে সরকারপ্রধান যেসব অনুষ্ঠানে দেশের বাইরে গেছেন, সেসব অনুষ্ঠানে পৃথিবীর অন্য অনেক দেশ স্রেফ প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকারপ্রধান সেখানে নিজে উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বাংলাদেশিদের কাছে প্রবল করেছেন।
তিনি আরও লেখেন, সর্বশেষ জাতিসংঘ সফরে বিএনপির ২ জন প্রতিনিধি ও জামায়াত-এনসিপির ১ জন করে প্রতিনিধি থাকায় জামায়াত-এনসিপি আপত্তি জানিয়েছে, তারা সরকার থেকে সমতা চায়! মানে নিজেদের মধ্যে সমতার নীতি প্রতিষ্ঠিত হলে আর কোনো দলের প্রয়োজন নেই! এভাবেই সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ গঠন করতে চায়। প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ সফর সফল ও সার্থক হোক।
মন্তব্য করুন