টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ যখন শুরুর ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তখন যে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটারের কাঁধে ভর করে এগিয়েছে দল, তাদের একজন মুশফিকুর রহিম। গল টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে লেখা ২৯২/৩—আর তাতে মুশফিকের নামের পাশে গর্ব করে জ্বলজ্বল করছে ১০৫*।
তবে দিনের শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে মুশফিক বললেন, এই সেঞ্চুরিকে তিনি তেমন ‘বিশেষ’ মনে করছেন না! বললেন, ‘এই সেঞ্চুরি আমার জন্য বিশেষ কিছু না। ক্যারিয়ারের শেষদিকে এসে প্রতিটা ইনিংসই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সবসময় চেষ্টা করি শতভাগ প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামতে। কখনো ফল আসে, কখনো আসে না।’
৩৮ বছর বয়সে এসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬ ইনিংস পর আবারও তিন অঙ্কের দেখা পেলেন মুশফিক। এটি তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরি, আর সব সংস্করণ মিলিয়ে ২১তম। উইকেটে এসে শুরু থেকেই ছিলেন ধীরস্থির, ১৮৬ বলে খেলেছেন অপরাজিত ১০৫ রানের ইনিংস, যেখানে ছিল মাত্র ৫টি চার।
মুশফিকের এই ইনিংসের সৌন্দর্য শুধুমাত্র তার রানের সংখ্যাতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং দলের জন্য তার অবদানেই আজকের এই দৃঢ় ভিত। শান্তর সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে গড়েছেন ২৪৭ রানের অপরাজিত জুটি, যা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি।
বাংলাদেশের টেস্ট ইতিহাসে এটি চতুর্থ উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মুশফিক নিজেই মুমিনুল হকের সঙ্গে গড়েছিলেন ২৬৬ রানের জুটি।
গল স্টেডিয়াম মুশফিকের জন্য বরাবরই বিশেষ। এখানেই ২০১৩ সালে করেছিলেন বাংলাদেশের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। আজ সেই স্মৃতি টেনে বললেন, ‘যখন দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে দ্বিশতক করেছিলাম, তখন থেকেই জায়গাটা আমার জন্য স্পেশাল। এটাই আমাদের প্রজন্মকে ধাপে ধাপে ওপরে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দিয়েছে।’
দিনটা ছিল বাংলাদেশের, ছিল শান্তর। তবে মুশফিকের ব্যাট যেন বারবার প্রমাণ দেয়, বয়স শুধুই সংখ্যা। সেঞ্চুরিটা তার কাছে যতই সাধারণ মনে হোক, দলের জন্য সেটি ছিল এক অমূল্য অনন্য অর্জন।
মন্তব্য করুন