বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ অব লিজেন্ডস ২০২৫ জমে উঠলেও সবচেয়ে আকর্ষণীয় ম্যাচটি নিয়েই এখন বড় প্রশ্নচিহ্ন—ভারত বনাম পাকিস্তান সেমিফাইনাল আদৌ হবে তো? টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত লড়াইটি নিয়ে এখন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক উত্তেজনা, খেলোয়াড়দের মন্তব্য এবং স্পনসর বিতর্কের জটিল এক পরিস্থিতি।
লিগ পর্ব শেষে পাকিস্তান ছিল একেবারে শীর্ষে—চারটি জয় ও একটি পরিত্যক্ত ম্যাচে তাদের অবস্থান ছিল শক্ত। অন্যদিকে, ভারতের লিগ পর্ব ছিল হতাশাজনক। তিনটি হারের বিপরীতে একটি মাত্র জয়, আর একটি ম্যাচ ছিল পরিত্যক্ত। সমান পয়েন্ট থাকা অবস্থায় তারা শুধুমাত্র নেট রান রেটের জোরে সেমিফাইনালে উঠেছে।
আর এই 'পরিত্যক্ত' ম্যাচটি নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত—ভারত-পাকিস্তান লিগ পর্বের ম্যাচটি মাঠেই গড়ায়নি। পেহেলগাম হামলার পরবর্তী রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে ভারতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড়—শিখর ধাওয়ান ও হরভজন সিংয়ের মতো তারকারা অংশ নিতে অস্বীকৃতি জানায়। ফলাফল, ম্যাচ বাতিল এবং উভয় দলকে এক পয়েন্ট করে দেওয়া হয়।
যদিও পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নসের মালিক কামিল খান আগেই বলেছিলেন, ‘আমরা চাই না ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সেমিফাইনাল হোক।’
কিন্তু লিগ টেবিল অনুযায়ী এই দুই দলই মুখোমুখি হওয়ার কথা ১ আগস্ট, এজবাস্টনে।
কামিল খানের একটি পূর্ববর্তী বিবৃতি ছিল শান্তির আহ্বানে ভরপুর, ‘ক্রিকেট যেন রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকে। খেলাধুলা মানুষকে একত্র করে, আর আমরা এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছি শান্তি ও ইতিবাচক বার্তা ছড়ানোর জন্য।’
সমস্যা আরও ঘনীভূত হয়েছে টুর্নামেন্টের অন্যতম প্রধান স্পনসর EaseMyTrip সরে দাঁড়ানোয়। তাদের স্পষ্ট বার্তা, ‘সন্ত্রাস ও ক্রিকেট একসঙ্গে চলতে পারে না।’ এদিকে ভারতীয় ওপেনার শিখর ধাওয়ান বলেছেন, ‘যখন আগের ম্যাচ খেলিনি, এখনো খেলব না।’
এই বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভারতীয় দলের একাংশ এখনো পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মাঠে নামতে প্রস্তুত নয়।
বিকল্প কী?
সেমিফাইনালের সূচি পরিবর্তনের কথা চিন্তা করলেও, একদিকে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া—যাদের সঙ্গে শিডিউল জটিল হয়ে যাবে। আর ভারত যদি সরে দাঁড়ায়, তবে নিয়ম অনুযায়ী ফাইনালে উঠে যাবে পাকিস্তান। তবে একই সমস্যা তৈরি হবে ফাইনালেও—যদি ভারত বাদ পড়ে এবং প্রতিপক্ষ পাকিস্তান হয়।
ফুটবল বা ক্রিকেট—যেখানেই ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি হয়, সেটা হয়ে ওঠে এক মহাযুদ্ধ। কিন্তু এখানে যুদ্ধ নয়, বরং অনিশ্চয়তা—এই ম্যাচ কি আদৌ মাঠে গড়াবে?
বর্তমানে সেমিফাইনাল হওয়ার কথা এজবাস্টন স্টেডিয়ামে, ১ আগস্ট। আয়োজকদের জন্য এটি কেবল একটি ম্যাচ নয়, বরং পুরো টুর্নামেন্টের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে এই ২২ গজেই।
মন্তব্য করুন