

ভারতের বিপক্ষে সেই সেমিফাইনাল হারের পর অনেকটা সময় কেটে গেছে, কিন্তু মনের ভেতর এখনও রয়ে গেছে গভীর এক শূন্যতা। অস্ট্রেলিয়া নারী দলের অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি স্বীকার করলেন, নাভি মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হারটা তাকে এখনও তাড়া করে ফিরছে।
ওই ম্যাচেই ইতিহাস গড়েছিল হারমানপ্রীত কৌরের ভারত। ৩৩৯ রানের টার্গেট তাড়া করে জয় তুলে নেয় তারা—যা নারী বা পুরুষ, উভয় বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। পরে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপও জেতে ভারত।
উইলো টক ক্রিকেট পডকাস্টে সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটার ব্র্যাড হ্যাডিনের সঙ্গে আলাপে হিলি বলেন, ‘সত্যি বলতে, এখনো ভালো নেই আমি। এটা এমন এক হার, যা কিছুদিন মনে থাকবে। টানা সাত সপ্তাহের দীর্ঘ সফরে আমরা অসাধারণ ক্রিকেট খেলেছিলাম, কিন্তু ভারতের বাধা টপকাতে পারিনি—এটাই হতাশার।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ফাইনাল দেখিনি, তবে ভারত যে জিতেছে, সেটা দারুণ। এটা নারী ক্রিকেটকে বিশ্বজুড়ে আরও জনপ্রিয় করবে। আমাদের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্ব আছে, কিন্তু সেই ম্যাচটা এখনও মনে পোড়ে।’
সেমিফাইনালে ফিবি লিচফিল্ডের প্রথম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরিতে ৩৩৮ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে হিলির মতে, সেটিও যথেষ্ট ছিল না।
‘আমরা অন্তত ৩৫০ তুলতে পারতাম। অ্যাশ গার্ডনার দারুণ খেলেছিল, কিন্তু শেষের দিকে কয়েকটা উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম। হয়তো ১০-১৫ রান কম হয়েছে, যা পার্থক্য গড়ে দেয়।’
হিলির মতে, সেই ম্যাচের আসল পার্থক্যটা হয়েছিল বল হাতে ও পরিস্থিতি বুঝে খেলার জায়গায়—‘ডিওয়াই পাতিলের লাল মাটির উইকেটে শিশির খুব একটা কাজ করে না। তবে আলোর নিচে বল বেশ স্লো হচ্ছিল। আমাদের উচিত ছিল আগেভাগে গতি পরিবর্তন করা, কিন্তু আমরা ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পারিনি।’
তিনি আরও জানান, মাঠের ভেতরে নানা বিশৃঙ্খলাও দলের মনোযোগ ভেঙে দিয়েছিল—‘আমার ব্যাটিংয়ের সময় একদিকে আলো নিভে যাচ্ছিল, আবার মানুষ সাইটস্ক্রিনের সামনে হাঁটছিল। এমন বিশৃঙ্খলা ভারতে প্রায়ই দেখা যায়। আমি ভেবেছিলাম একটু অপেক্ষা করি, হয়তো খেলা বন্ধ হবে, কিন্তু ঠিক তখনই একটার পর একটা ঘটনা ঘটছিল।’
জেমাইমা রদ্রিগেসের হাতে সেই সুযোগ না নেওয়া, যিনি পরে অপরাজিত ১২৭ রানে দলকে জয়ের পথে নিয়ে যান—সেটিও হিলির স্মৃতিতে গভীর দাগ রেখে গেছে।
সারা টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরও শুধু এক রাতে সব হারানোই হয়তো হিলির কষ্টের কারণ, ‘সবাই দারুণ খেলছিল। এমন একটা দলের অংশ ছিলাম, যারা নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলছিল। অথচ এক রাতে, এক ‘অফ ডে’-তে সব শেষ হয়ে গেল। ট্রফিটা হাতে না পাওয়াটা কষ্টের।’
মন্তব্য করুন