

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা ঘিরে শুরু হয়েছে নানা নাটকীয়তা। খসড়া তালিকার ওপর আপত্তি জানানোর দিন শেষ হতেই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু অভিযোগ—যার কেন্দ্রে জাতীয় দলের সাবেক দুই অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও ফারুক আহমেদ।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে জমা পড়েছে মোট ৩০টি আপত্তি। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের প্রতিনিধি হিসেবে তামিমের কাউন্সিলরশিপ এবং মোহামেডানের হয়ে ফারুক আহমেদের কাউন্সিলরশিপ।
তামিমকে ঘিরে ‘ভূতুড়ে’ আপত্তি
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণার পর ঘরোয়া ক্রিকেটে আর না খেলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। অথচ আপত্তিপত্রে দাবি করা হয়েছে, তিনি এখনো ‘রানিং ক্রিকেটার’—তাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তার কাউন্সিলর হওয়া সম্ভব নয়। শুধু তাই নয়, আপত্তিতে আরও বলা হয়েছে তামিম নাকি ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের সদস্যই নন।
কিন্তু ঘটনা মোড় নেয় আরও নাটকীয় দিকে, যখন আপত্তির কাগজে স্বাক্ষরকারী হিসেবে যার নাম ব্যবহার করা হয়েছে, সেই সাবেক ক্রিকেটার হালিম শাহ দেশের একটি গণমাধ্যমমকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন—তিনি কোনো চিঠি দেননি। কানাডাপ্রবাসী এই সাবেক ক্রিকেটার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো চিঠি দিইনি, কোনো কাগজেও সই করিনি। এটা কোথা থেকে এলো, আমি জানি না।’
অন্যদিকে ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের সভাপতি খালেদ মাহমুদ নিশ্চিত করেছেন, তামিম শুধু ক্লাবের সদস্য নন, তিনি যুগ্ম সম্পাদকও। তার ভাষায়, ‘তাকে কাউন্সিলর করে পাঠানোর চিঠিতে আমি নিজেই সই করেছি।’
ফারুক আহমেদের ফরমে সময়ের গরমিল
সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদের কাউন্সিলরশিপ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, নির্ধারিত সময় সন্ধ্যা ৬টার পর নয়, তার ফরম জমা পড়েছে রাত সাড়ে আটটায়। মোহামেডানের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান এবং তেজগাঁও ক্রিকেট একাডেমির প্রতিনিধি লিখিতভাবে তার প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের পর্যবেক্ষণ
এখানেই শেষ নয়। দুদকের প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগ থাকা ১৫টি ক্লাবকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তেও সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিতর্ক। নির্বাচনী কমিশনের এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে আপত্তি জানিয়েছে একাধিক ক্লাব। বর্তমান পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু ও সাবেক পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াও এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।
সামনে শুনানি
সব মিলিয়ে বিসিবি নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এক অস্বচ্ছ পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনে এসব আপত্তির শুনানি হবে। সেখানেই নির্ধারণ হবে তামিম-ফারুকদের কাউন্সিলরশিপ টিকে থাকবে, নাকি ঝরে পড়বে বোর্ডের নির্বাচনী তালিকা থেকে।
মন্তব্য করুন