বিপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব বাবদ টি-স্পোর্টসের কাছে বড় অঙ্ক পাওনা আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের । তবে টি-স্পোর্টস সে টাকার পে-অর্ডার দিলেও তা বারবার ফেরত পাঠাচ্ছে বোর্ড। একটি সূত্রে জানা গেছে, ১১ কোটি ৬৩ লাখ ৫৯ হাজার ৩৩২ টাকার পে-অর্ডার দুই দফা ফেরত পাঠিয়েছে তারা। বিসিবি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতেই এমন পন্থায় ঝুঁকছে তারা—মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিপিএলের ১০ম ও ১১তম (২০২৪ ও ২০২৫) আসরের মিডিয়া রাইটস পেতে ৫৬ কোটি (২৮ কোটি টাকা করে) টাকায় বিসিবির সঙ্গে চুক্তি করে টি-স্পোর্টস অ্যান্ড কনসোর্টিয়াম। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে প্রতিটি আসরে কমপক্ষে ১০ কোটি টাকা করে লস হয় প্রতিষ্ঠানটির। প্রতিটি ম্যাচে যেখানে গড়ে ৪৫ মিনিট করে বিজ্ঞাপন চালানো সম্ভব, সেখানে ম্যাচপ্রতি অর্ধেকেরও কম বিজ্ঞাপন বুকিং আসে। মিনিটপ্রতি বিজ্ঞাপনের দরও আগের আসরগুলোর তুলনায় ছিল অনেক কম।
সামগ্রিক বিষয়গুলো উল্লেখ করে তিন দফায় চিঠির মাধ্যমে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে রাইটস ফি পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করে তারা। টি স্পোর্টস অ্যান্ড কনসোর্টিয়াম চিঠিতে ১০ কোটি টাকা ছাড় দেওয়ার আকুল অনুরোধ জানালে বিসিবির ১৯তম বোর্ড সভায় বিষয়টির ওপর গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়। সর্বসম্মতিক্রমে, ৮ কোটি টাকা ছাড় দেওয়ার অনুমোদন হয় সেখানে।
৮ কোটি টাকা ছাড় দিয়ে বাকি অর্থ পরিশোধ করার জন্য বিসিবি থেকে যোগাযোগ করা হয়। একই সঙ্গে জানানো হয় সংশোধিত একটি চুক্তিপত্র তৈরি করেছে বিসিবি, যেখানে যাবতীয় বিষয়গুলো উল্লেখ করা হবে। ক্রিকেট বোর্ড থেকে বকেয়া অর্থ পরিশোধের জন্য সম্ভাব্য তারিখও জানতে চাওয়া হয়। সংশোধিত চুক্তিপত্রের অপেক্ষায় ছিল টি-স্পোর্টস অ্যান্ড কনসোর্টিয়াম। কিন্তু, রহস্যজনক কারণে সেটি আর টি-স্পোর্টস অ্যান্ড কনসোর্টিয়ামকে পাঠানো হয়নি। বিসিবির অপেক্ষায় না থেকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) বকেয়া যাবতীয় অর্থ (পে-অর্ডার) বিসিবির অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্টে পাঠায় রাইট হোল্ডাররা। বিপিএলের দেনা-পাওনার হিসাব শূন্য (০) দেখিয়ে নো অবজেকশন সার্টিফিকেট চাওয়া হয়। রহস্যজনকভাবে অ্যাকাউন্টস ডিপার্টমেন্ট সেটি দিতে রাজি হয়নি এবং পাঠানো পে-অর্ডারগুলো ফেরত দেওয়া হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর চিঠি পাঠিয়ে আবারও বকেয়া অর্থ গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু এখনো সে চিঠির কোনো উত্তর দেয়নি বিসিবি।
ব্রডকাস্টারদের পক্ষ থেকে আর্থিক ছাড় চাওয়া কিংবা দেওয়া কোনোটাই নতুন ঘটনা নয়। ২০২৩ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে ডিজনি হটস্টার। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির কাছ থেকে ১০ কোটি ডলার ছাড় চায় তারা।
মন্তব্য করুন