এশিয়া কাপের ফাইনাল শেষে মাঠের উত্তাপ পেরিয়ে এখন ঝড় উঠেছে প্রশাসনিক অঙ্গনে। ভারতীয় দল ট্রফি গ্রহণে অস্বীকৃতি জানালে সেই ট্রফি হাতে নিয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এএসসি) সভাপতি ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি। ঘটনাটিকে ‘অপেশাদার আচরণ’ আখ্যা দিয়ে বিসিসিআই তার বিরুদ্ধে আইসিসির কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
ভারতের মিডিয়া সূত্রের দাবি, নকভি বলেছেন—এশিয়া কাপের ট্রফি আপাতত দুবাইয়ের এএসসি অফিসেই থাকবে, তার অনুমতি ছাড়া এটি ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। তিনি নিজেই ট্রফি দিতে চান সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দলকে—যদিও ভারতীয় বোর্ড এর বিরোধিতা করেছে আগেই।
পিটিআই-এর প্রতিবেদন বলছে, বিসিসিআই এরই মধ্যে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছে যে নকভির আচরণ ছিল অতিরিক্ত কর্তৃত্বপরায়ণ ও প্রোটোকল-বহির্ভূত।
এক ভারতীয় বোর্ড কর্মকর্তা বলেছেন, ‘নকভির এমন জেদ দেখানোর কোনো অধিকার ছিল না। টুর্নামেন্টের অফিসিয়াল হোস্ট ছিল ভারত, ফলে ট্রফি তাদের কাছেই পাঠানো উচিত ছিল, নকভির অফিসে নয়।’
এই বিতর্কের শেকড় লুকিয়ে আছে টুর্নামেন্টের শুরুতেই। পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলি আগার সাথে হাত মেলাননি ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। পরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) উল্টো অভিযোগ তোলে ম্যাচ রেফারির বিরুদ্ধে, এবং পরবর্তী ম্যাচের রেফারি পরিবর্তনেরও দাবি করে।
এক পর্যায়ে পিসিবি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ বয়কটের হুমকি দেয়। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা খেলে, এবং ফাইনালে আবার মুখোমুখি হয় দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। ফাইনালে জয় পায় ভারত—কিন্তু মাঠের বাইরের উত্তেজনা থামেনি।
এশিয়া কাপ শেষে নকভির কার্যকলাপ নিয়ে আইসিসি ও এএসসি অভ্যন্তরে এখন আলোচনা তুঙ্গে। বিসিসিআই চায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। তবে পাকিস্তান বোর্ড এই বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
যদি বিসিসিআইয়ের দাবি বাস্তবে রূপ নেয়, তবে মহসিন নকভির ক্রিকেট প্রশাসনিক ক্যারিয়ার এখানেই থেমে যেতে পারে—আর সেই সঙ্গে এশিয়া কাপের এই বিতর্ক স্মরণীয় হয়ে থাকবে “ট্রফি বন্দি কাণ্ড” হিসেবে।
মন্তব্য করুন