

চারদিনের পুরো নাটকীয়তা যেন ছিল একতরফা—ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশ দাপট দেখিয়ে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার একদম কাছাকাছি। ২-০–এর নিখুঁত ক্লিন–সুইপ এখন আর মাত্র চারটি উইকেটের দূরত্বে।
চতুর্থ দিন সকালে ৩৬৭ রানের লিড নিয়ে খেলতে নেমে দ্রুতই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। সাদমান ইসলামকে এলবিডব্লিউ করেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন, আর পাঁচ বল পরই নাজমুল হোসেন শান্ত গালিতে ক্যাচ দেন জর্ডান নিলের বাউন্সারে।
কিন্তু এরপরই বদলে যায় ম্যাচের গতি। মমিনুল হক (৮৭) এবং মুশফিকুর রহিম (৫৩)* জুটিতে যোগ করেন ১২৩ রান, আর তাতেই নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়ে আয়ারল্যান্ডকে চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশ।
মমিনুল নিজের ২৫তম টেস্ট ফিফটি পূর্ণ করেন—এই সিরিজে তার তৃতীয়—নামিয়ে আনেন পুরো ইনিংসে প্রয়োজনীয় স্থিরতা। অপরপ্রান্তে মুশফিক খেলেন আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে, ম্যাকব্রিনকে টেনে মারেন দুর্দান্ত এক ছক্কা। লাঞ্চের আগেই যোগ হয় আরও ১২৪ রান, লিড ফুলে ওঠে ৪৯১–এ।
বিকেলের প্রথম সেশনে নিজের ২৮তম ফিফটি ছোঁয়ার পরও আক্রমণ চালিয়ে যান মুশফিক। কিন্তু মোমিনুল কভার-এ ক্যাচ দিলে আর বাড়ায়নি বাংলাদেশ; তৎক্ষণাৎ ঘোষণা করা হয় ইনিংস। আয়ারল্যান্ডের সামনে দাঁড়ায় প্রায় অবাস্তব ৫০৯ রানের লক্ষ্য।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে অল্প সময়েই ব্যাকফুটে আয়ারল্যান্ড। অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেট–শিকারি হিসেবে নতুন ইতিহাস গড়েন তাইজুল ইসলাম। পল স্টার্লিং শুরুতে দুটো বাউন্ডারি মেরে আগ্রাসী হলেও পরক্ষণেই শর্ট–লেগে ক্যাচ দেন, তাইজুলের অফ-স্টাম্পে টার্ন করা বল বুঝতেই পারেননি।
কেড কারমাইকেল ও হ্যারি টেক্টরের ৫০ রানের জুটি ম্যাচকে সামান্য দীর্ঘায়িত করলেও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি সেটা। বোলিংয়ে এসেই প্রথম বলেই কারমাইকেলকে এলবিডব্লিউ করেন হাসান মুরাদ—ডানহাতি ব্যাটারের ব্যাট-প্যাড চেপে যাওয়া সেই স্লাইডার আঘাত করেছিল মাঝখানের গর্তে।
টেক্টর এরপরও নিজের লড়াই চালিয়ে যান, তুলে নেন লড়াকু এক ফিফটি। কিন্তু মুরাদেরই ঢিলেঢালা এক ডেলিভারিকে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন।
লরকান টাকারকে টাইট লাইনে ফেরান খালেদ আহমেদ, আর স্টিফেন ডোহেনি—যাকে শুরুতে এবাদত মিস করেছিলেন ডিপে—শেষ পর্যন্ত তাইজুলের তৃতীয় শিকার হন।
দিনের খেলা শেষের দুই ওভার বাকি থাকতেই আলো কমে আসে, আম্পায়াররা খেলা বন্ধ করে দেন। আয়ারল্যান্ড তখন ১৭৬/৬, বাংলাদেশের জয়ের জন্য বাকি মাত্র ৪ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৭৬ & ২৯৭/৪ ঘোষণা (মমিনুল ৮৭; গ্যাভিন হোয়ে ২/৮৪) আয়ারল্যান্ড: ২৬৫ & ১৭৬/৬ (টেক্টর ৫০; তাইজুল ৩/৫৫) লিড: বাংলাদেশ এগিয়ে ৩৩২ রানে
মন্তব্য করুন