আলো ঝলমলে সৌদি প্রো লিগের মোহ আর কোটি কোটি টাকার প্রস্তাব—সবকিছু পেছনে ফেলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডেই থেকে যাচ্ছেন ব্রুনো ফের্নান্দেজ। ক্লাবটির বর্তমান দুর্দশা, শিরোপাহীন মৌসুম, অর্থনৈতিক টানাপোড়েন—এই বাস্তবতা সত্ত্বেও নিজেকে আবারও ওল্ড ট্রাফোর্ডে সমর্পণ করলেন পর্তুগিজ এই তারকা।
সৌদি ক্লাব আল হিলাল ব্রুনোকে দলে টানতে প্রস্তুত ছিল প্রায় ১০০ মিলিয়ন পাউন্ডের প্রস্তাব নিয়ে। শুধু ট্রান্সফার ফি নয়, তার জন্য অপেক্ষা করছিল বিপুল পরিমাণ বেতনও। কিন্তু পরিবার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার পর সিদ্ধান্তটা নিয়েছেন স্পষ্টভাবে—‘ম্যানইউ ত্যাগ নয়, বরং ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে সঙ্গে থাকব।’
সূত্র বলছে, ইউনাইটেডের নতুন কোচ রুবেন আমোরিম ব্যক্তিগতভাবে ব্রুনোকে দলে রাখার জন্য প্রচণ্ড আগ্রহ দেখিয়েছেন। তাকে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মূল স্তম্ভ ভাবা হচ্ছে। এই আস্থা এবং ক্লাবের প্রতি দায়বদ্ধতা ব্রুনোর সিদ্ধান্তে বড় ভূমিকা রেখেছে।
গত মৌসুমে দলের ব্যর্থতা সত্ত্বেও ব্রুনো ছিলেন নিঃসন্দেহে সেরা খেলোয়াড়। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ১৯ গোল, ৫৭ ম্যাচ—এবং ‘প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার’ খেতাব। এমন পারফরম্যান্সের পর ক্লাব ছাড়লে সেটা হতো সুবিধাবাদী পছন্দ। কিন্তু ব্রুনোর পছন্দটা হল আত্মত্যাগের।
এই নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সৌদি আরব থেকে প্রস্তাব পেলেন ব্রুনো। গত বছরও সৌদি ও বায়ার্ন মিউনিখ আগ্রহ দেখালেও ইউনাইটেডের সঙ্গেই নতুন চুক্তি করেন তিনি। এ বছর ক্লাব বিশ্বকাপের জন্য বড় নাম খুঁজছিল আল হিলাল। তাই ব্রুনোকে তারা বানাতে চেয়েছিল নতুন ‘মার্কি সাইনিং’। কিন্তু তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলো না।
যেখানে ইউনাইটেড আর্থিক টানাপোড়েনে পড়ে খেলোয়াড় বিক্রির চাপে, সেখানে ব্রুনোর এই সিদ্ধান্ত নতুন মৌসুমে দল গঠনের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তিনি শুধু দলের অধিনায়কই নন, এই ক্লাব সংস্কৃতির প্রতীক হয়ে উঠেছেন ধীরে ধীরে।
সৌদি প্রলোভনের বিপরীতে ব্রুনো ফের্নান্দেজের এই সিদ্ধান্ত একধরনের বিরল বার্তা—সব সময় অর্থ নয়, কখনো কখনো ভালোবাসা, দায়বদ্ধতা ও নেতৃত্বই বড় হয়। আর সেই বার্তা এখনো কিছুটা সম্মান ফিরিয়ে আনল ম্যানইউর জর্জরিত মর্যাদায়।
মন্তব্য করুন