গত বছর জার্মানিতে হওয়া ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইয়ামাল-পেদ্রিদের স্পেন। তবে চ্যাম্পিয়ন স্পেনের হয়ে ইউরো ২০২৪ খেলতেই নাকি মন চায়নি তাদের অধিনায়ক আলভারো মোরাতার। মানসিক যন্ত্রণায় এতটাই ভেঙে পড়েছিলেন এই স্ট্রাইকার যে, ইচ্ছা ছিল ভুয়া চোটের নাটক করে টুর্নামেন্ট থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার! এমন বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিই দিয়েছেন তিনি নিজের সদ্য প্রকাশিত ডকুমেন্টারি ‘Morata: They Don’t Know Who I Am’-এ।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ মিস করার পরই শুরু হয় আত্মবিশ্বাসের ভাঙন। খেলাটা তখনই শেষ হয়নি, কিন্তু মনে হচ্ছিল যেন অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের স্বপ্নটা ওখানেই শেষ!
মোরাতা বলেন, ‘বলটা চোখে ধরছিল না। ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমে একা অনেকক্ষণ বসেছিলাম, কাঁদতেই চাচ্ছিলাম। সেখান থেকেই শুরু মানসিক অবসাদের। হঠাৎ করে বুকে ব্যথা, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, ঘুমাতে ভয় লাগত—এই ভেবে যে ঘুমিয়ে আর উঠব না।’
এই মানসিক অবস্থা এতটাই তীব্র ছিল যে ইউরো ২০২৪ খেলতে না যাওয়ার জন্য দলের চিকিৎসককে ফোন করে জানান তিনি। তখন স্পেনের চিকিৎসক অস্কার সেলাদা তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার, যিনি নিজেও ডিপ্রেশনের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন দানি হারকের মৃত্যুর পর। ইনিয়েস্তার সঙ্গে সেই কথোপকথন ছিল মোরাতার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট।
জাতীয় দলের কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে নিজেও পাশে দাঁড়ান। বলেন, ‘তোমার অভিজ্ঞতা আর নেতৃত্ব দলকে প্রয়োজন।’ এই বার্তাই যেন নতুন করে সাহস জোগায় মোরাতাকে।
রদ্রি, দানি ওলমো, নিকো উইলিয়ামস, মিকেল ওয়ারজাবাল ও আলেক্স রেমিরোও পাশে ছিলেন বন্ধুর মতো। বিশেষ করে ওয়ারজাবাল ও রেমিরোর সঙ্গে গলফ খেলাকে মোরাতা আখ্যা দিয়েছেন, ‘এক ধরনের থেরাপি’ হিসেবে।
শেষ পর্যন্ত স্পেন চ্যাম্পিয়ন হয় ইউরো ২০২৪-এ। কিন্তু এর মাঝেই জাতীয় দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন মোরাতা। নেশন্স লিগ ফাইনালে পর্তুগালের বিপক্ষে পেনাল্টি মিস করার পর সিদ্ধান্ত নিতে বসেছেন—লাভ জার্নি কি এখানেই শেষ, নাকি দেখা যাবে ২০২৬ বিশ্বকাপে আরও একবার?
মন্তব্য করুন