

বিশ্বকাপের আলোচনায় এখন পর্যন্ত ডুবন্ত দোহা ফের আলোচনায়— এবার মেসি বনাম ইয়ামালের ‘ফিনালিসিমা’ ঘিরে। কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ও ইউরো জয়ী স্পেনের মহারণটি হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ২৮ মার্চ, লুসাইল স্টেডিয়ামে। তবে এবার শোনা যাচ্ছে নতুন তারিখে হবে এ ম্যাচটি।
আগামী বছরের মার্চে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ফিনালিসিমা—যেখানে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়নরা মুখোমুখি হয়। প্রথমে ম্যাচটি ২৮ মার্চ হওয়ার কথা থাকলেও স্প্যানিশ দৈনিক মার্কা জানিয়েছে, তারিখ একদিন এগিয়ে এনে ২৭ মার্চ, শুক্রবার ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে ফিফা।
সবচেয়ে বড় খবর—ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হতে পারে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে, যেখানে তিন বছর আগে বিশ্বকাপ ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিল লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। সেই একই মাঠে আবারও নীল-সাদা জার্সির অধিনায়ককে দেখা গেলে তা হবে এক প্রজন্মের প্রতীকী পুনর্মিলন—এক পাশে মেসি, অন্য পাশে স্পেনের নতুন বিস্ময়বালক লামিন ইয়ামাল।
মার্কার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিফা এবার এই ম্যাচটিকে বিশ্বকাপের আবহে সাজাতে চায়। দুই দলের আগমন থেকে শুরু করে প্রেস কনফারেন্স পর্যন্ত সবকিছু পরিকল্পিত হবে যেন এটি এক মহাযজ্ঞের মতো—একটি প্রতীকী ‘ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল’-এর পুনর্জন্ম।
তবে সবকিছু নির্ভর করছে স্পেনের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ফলাফলের ওপর। লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল যদি সরাসরি ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করে, তবে মার্চেই ম্যাচ হবে। কিন্তু স্পেনকে যদি ইউরোপীয় প্লে-অফ খেলতে হয়, তাহলে ফিনালিসিমা স্থগিত করা হবে।
বর্তমানে স্পেন ইউরোপিয়ান বাছাইপর্বের ‘ই’ গ্রুপে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে, তুরস্ক, জর্জিয়া ও বুলগেরিয়ার ওপর স্বস্তিদায়ক ব্যবধান রেখে। আগামী সপ্তাহে যদি তারা জর্জিয়াকে হারায় এবং তুরস্ক হোঁচট খায়, তবে ম্যাচের আগেই যোগ্যতা নিশ্চিত হয়ে যাবে ‘লা রোহা’র।
মার্চের উইন্ডোই এই ম্যাচের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। জুনে জাতীয় দলগুলোর ফিফা ফ্রেন্ডলি নির্ধারিত থাকায় বিকল্প সময় পাওয়া কঠিন। ম্যাচ যদি মার্চে না হয়, তবে সম্ভাব্য তারিখগুলো ২০২৬ সালের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর বা নভেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে।
এরই মধ্যে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন একই উইন্ডোতে আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করছে। শোনা যাচ্ছে, জুলেন লোপেতেগি পরিচালিত কাতার জাতীয় দল সেই ম্যাচের প্রতিপক্ষ হতে পারে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে আগামী ৫ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ ড্রয়ের পর।
অবশ্য এই প্রতিযোগিতার সূচনা ১৯৮৫ সালে ‘আরতেমিও ফ্রাঞ্চি কাপ’ নামে, যেখানে ফ্রান্স জয়ী হয়েছিল উরুগুয়ের বিপক্ষে। ১৯৯৩ সালে মার দেল প্লাতায় ডেনমার্ককে হারিয়ে ট্রফি জেতে আর্জেন্টিনা। এরপর দীর্ঘ বিরতির পর ২০২২ সালে ওয়েম্বলিতে ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে স্কালোনার দল ট্রফিটি তোলে।
২০২৪ কোপা আমেরিকা ফাইনালে কলম্বিয়াকে হারিয়ে আবারও এই মর্যাদাপূর্ণ লড়াইয়ে নামার সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। এখন অপেক্ষা শুধু ফিফার সবুজ সংকেতের—দোহায় আবারও কি দেখা যাবে মেসির সেই জাদুকরী হাসি?
মন্তব্য করুন