ফুটবল ইতিহাসের এক জীবন্ত কিংবদন্তি তিনি। বয়স ৫৮, তবু এখনো মাঠে নামেন খেলোয়াড়ের ভূমিকায়। জাপানের 'কিং কাজু' খ্যাত কাজুয়োশি মিউরা আবারও নজর কাড়লেন পেশাদার ফুটবলে ৪০তম মৌসুমে খেলে।
রোববার জাপান ফুটবল লিগের (চতুর্থ স্তর) ম্যাচে আতলেতিকো সুজুকার হয়ে ৮২তম মিনিটে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন মিউরা। গোল না করলেও তার উপস্থিতি দলের ২-১ গোলের জয়ে ভূমিকা রাখে। ম্যাচ শেষে ৫৮ বছর ১০৯ দিন বয়সী এই স্ট্রাইকার বলেন, 'আমি খুশি যে দলের জন্য কিছুটা হলেও অবদান রাখতে পেরেছি। সতীর্থ ও কোচিং স্টাফের সহায়তা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। এখন নিজের পারফরম্যান্স আরও উন্নত করতে চাই।'
১৯৮৬ সালে ব্রাজিলের বিখ্যাত ক্লাব সান্তোসে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মিউরা। এরপর খেলেছেন ইতালি, ক্রোয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং পর্তুগালের দ্বিতীয় স্তরের ক্লাব অলিভেইরেন্সের হয়ে। ২০২৩ সালে জাপানে ফিরে আসেন তিনি। সেখানে ইয়োকোহামা এফসি থেকে ধারে খেলেছেন এবং বর্তমানে আতলেতিকো সুজুকায় আছেন।
১৯৯৩ সালে যখন জাপানে পেশাদার ফুটবল লিগ (জে-লিগ) চালু হয়, তখন মিউরাই ছিলেন অন্যতম প্রধান মুখ। জাতীয় দলের হয়ে ৮৯ ম্যাচে ৫৫ গোল করা এই ফরোয়ার্ড ১৯৯৮ বিশ্বকাপের স্কোয়াডে জায়গা না পাওয়ায় জাপানে তখন বেশ বিতর্কও হয়েছিল।
২০২২ সালে প্যারিস সেইন্ট জার্মেইনের জাপান সফরের সময়, লিওনেল মেসি, নেইমার ও এমবাপ্পের সঙ্গে এক মঞ্চে দেখা যায় মিউরাকে। বিশ্বসেরা তারকাদের পাশে দাঁড়িয়েও নিজের ঐতিহ্য ও শ্রদ্ধার জায়গা ধরে রেখেছিলেন 'কিং কাজু'।
জাপানে তিনিই সবচেয়ে বয়স্ক পেশাদার ফুটবলার, সম্ভবত বিশ্বের যেকোনো পেশাদার ফুটবলারের চেয়েও বেশি বয়সী। তবু প্রতিনিয়ত প্রমাণ করছেন, বয়স শুধু একটি সংখ্যা। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা ও অদম্য মানসিকতাই তাঁর আসল পরিচয়।
যেখানে আধুনিক ফুটবলে ৩৫ পার করলেই অবসর আলোচনায় চলে আসে, সেখানে ৫৮ বছর বয়সেও ম্যাচ খেলছেন কাজুয়োশি মিউরা — এটা শুধু ফুটবল নয়, জীবনের এক অসাধারণ প্রেরণা।
মন্তব্য করুন