চিরচেনা গোলের জাদু, অগণিত ট্রফি আর দেড় দশকেরও বেশি সময়জুড়ে সাফল্যের পর এবার মাঠের বাইরেও নতুন ইতিহাস গড়লেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। বিশ্বের প্রথম ফুটবলার হিসেবে নাম উঠেছে তার ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার ইনডেক্সে, যেখানে স্থান পান বিশ্বের শীর্ষ ধনীরা।
ব্লুমবার্গের হিসাবে রোনালদোর সম্পদের পরিমাণ এখন প্রায় ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ হাজার ৬৫০ কোটি টাকার সমান। এই পরিমাণে ধরা হয়েছে তার ফুটবল ক্যারিয়ারের আয়, বিভিন্ন ব্যবসায়িক বিনিয়োগ এবং দীর্ঘদিনের ব্র্যান্ড চুক্তিগুলো।
রোনালদোর কিংবদন্তি ক্যারিয়ারের সিংহভাগ সময় কেটেছে ইউরোপে—ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ও জুভেন্টাসে খেলে দুই দশক ধরে মাঠে শাসন করেছেন তিনি। তবে ২০২৩ সালে সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর তার আয় একেবারে নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়।
২০০৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাঠে খেলার চুক্তি থেকে রোনালদোর আয় ছিল প্রায় ৫৫০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু আল নাসরে যোগ দেওয়ার পর তিনি ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত খেলোয়াড়ে পরিণত হন। ক্লাবটির সঙ্গে তার বার্ষিক আয় প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার, যা সম্পূর্ণ করমুক্ত।
২০২৫ সালের জুনে রোনালদো নতুন দুই বছরের চুক্তি করেছেন, যার মূল্য ৪০০ মিলিয়ন ডলার। এই চুক্তি অনুযায়ী তিনি সৌদি আরবেই থাকবেন তার ৪২তম জন্মদিনের পর পর্যন্ত।
নাইকি, আর্মানি ও ক্যাস্ট্রোলের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ডের সঙ্গে রোনালদোর দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি তার সম্পদে আরও ১৭৫ মিলিয়ন ডলার যোগ করেছে।
খেলার দিক থেকেও তিনি অগণিত রেকর্ডের মালিক — উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বাধিক গোল ও অ্যাসিস্ট, এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলে সর্বাধিক গোলদাতা ও ম্যাচ খেলা পুরুষ খেলোয়াড়।
মাঠের বাইরে রোনালদোর প্রভাবও তুলনাহীন। তিনি ইনস্টাগ্রামে বিশ্বের সর্বাধিক অনুসারী ব্যক্তি, এবং ফেসবুক, এক্স (টুইটার), ইউটিউব ও ইনস্টাগ্রাম মিলিয়ে এক বিলিয়ন ফলোয়ার অতিক্রম করা একমাত্র মানুষ।
৪০ বছর বয়সেও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো শুধু ফুটবলার নন, এক বিশ্বব্র্যান্ড। মাঠে যেমন গোলের পর গোল করে ইতিহাস গড়ছেন, মাঠের বাইরে তেমনি রেকর্ড ভাঙছেন সম্পদের ও প্রভাবের দৌড়ে। ফুটবলে যিনি প্রতিটি সীমা অতিক্রম করেছেন, সেই রোনালদো এখন আরেকবার প্রমাণ করলেন — সত্যিকারের কিংবদন্তিরা কখনও থামেন না।
মন্তব্য করুন