

প্রায় ১৩ বছর পর জাতীয় স্টেডিয়ামে ফিরেছিল বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। প্রত্যাবর্তনের সেই দিনটি স্মরণীয় করে রাখার স্বপ্ন ছিল সমর্থকদের—কিন্তু মাঠের গল্প লিখল হতাশা। তিন বছর আগে যাদের ৬-০ গোলে হারিয়েছিল মেয়েরা, সেই মালয়েশিয়ার বিপক্ষেই এবার তিন জাতি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ০-১ ব্যবধানে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো পিটার বাটলারের দলকে।
প্রথমার্ধেই ম্যাচটির নিয়ন্ত্রণ হারায় বাংলাদেশ। হাই লাইন ডিফেন্সে খেলা—যা থাইল্যান্ড সফরেই কোচ বাটলারকে সমালোচনার মুখে ফেলেছিল—সেই একই ছকেই আবার বিপদে পড়ল দল। ২৯ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে নুহাদফিনা মোফ ফিরদাউসের বুদ্ধিদীপ্ত চিপে বল পান নুর আইনসিয়া বিনতি মুরাদ। তার গতি সামলাতে ব্যর্থ হন বাংলাদেশের সেন্টারব্যাক কোহাতি কিসকু। পোস্ট ছেড়ে আগানো গোলরক্ষক রুপনাকে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে জাল খুঁজে নেন মালয়েশিয়ান মিডফিল্ডার।
এর আগেই গোলের সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। সপ্তম মিনিটে সুলতানার দারুণ পাসে শামসুন্নাহার জুনিয়রের ক্রস চেস্টা করেও মাথায় ছুঁইয়ে দিতে পারেননি ঋতুপর্ণা। পরের মিনিটেও ভালো আক্রমণ গড়েছিল স্বাগতিকরা, কিন্তু ফিনিশিং দুর্বলতায় গোলের দেখা মিলেনি।
বিরতির পর শক্তি বাড়াতে সাগরিকা, তহুরা ও স্বপ্নাকে নামান কোচ। তাতে সামান্য প্রাণ ফিরে আসে আক্রমণে। ৬৮ মিনিটে সুলতানার থ্রু বলে বাম প্রান্ত দিয়ে উঠে ঋতুপর্ণার দারুণ ক্রসে সাগরিকার হেড পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়—ম্যাচে বাংলাদেশের সবচেয়ে স্পষ্ট সুযোগ এটাই।
তবে রক্ষণভাগের দুর্বলতা রপ্ত হয়নি। দ্বিতীয়ার্ধে বারবার হাই লাইনের ফাঁক গলে উঠে আসে মালয়েশিয়া। রুপনা চকমা একাই অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে রাখেন। ৯০+১ মিনিটে ওয়ান-অন-ওয়ানে নুরফাজিরার শটও ঠেকান তিনি।
শেষ মুহূর্তে আশা জাগান মারিয়া। মাঝমাঠ থেকে কয়েকজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে শট নিলেও মালয়েশিয়া গোলরক্ষক নুরুল আজুরিনের কাছে হার মানেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ০-১ ব্যবধানেই থামতে হয় আফঈদাদের।
পিটার বাটলারের দলের সমস্যা স্পষ্ট—আক্রমণে ধারহীনতা, রক্ষণে অস্থিরতা আর একই ভুলের পুনরাবৃত্তি। তিন জাতি সিরিজের শুরুটা হলো হতাশায়; বাকি ম্যাচগুলোতেই এখন ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ।
মন্তব্য করুন